সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

এপ্রিল, ২০২১ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

রমাদি ১০

স্কুলে নিয়মিত এই পোশাকই পরে।বিপিন রীতিনীতিও সব শিখিয়ে দিল।বিপিনের বোন রমাও পাঠ্যে হিন্দুধর্ম শিক্ষা-র যেকোন বিষয় না বুঝলে, তা আলোচনার মাধ্যমে সহযোগীতা করতে থাকে আজকাল বদর, বিপিনের কাজ কর্মেও সহযোগীতা করে। রমার মা,বদরের এই আচার ব্যাবহারে নিজেও গর্বিত। শুরু থেকেই বিপিনের মাকে, বদর মা বলেই ডাকে।গোঁরা সমাজের লোকগুলোও তার আচার ব্যাবহারে সব কিছু ভুলে যায়।অল্পদিনেই স্কুলেও শিক্ষক থেকে শুরু করে সবার প্রিয় পাত্রে পরিনত হলএই ছেলেটি।প্রতিদিন বিকেলে বদর এখন স্কুল মাঠে ফুটবল খেলে হিন্দু ছেলেদের সাথে। রমার বান্ধবী বিথী প্রায় প্রতিদিনই দুই একবার রমাদের বাড়িতে আসে। আজও বদর এই সময় মাঠে ফটবল খেলিতেছে, এই ফাঁকে বিথী বদরের রুমে যায়, গিয়েই রমাকে বলে ঃএই রমা আমি বদরদার ঘরে রমা তখন ওদের বড় ঘরখানাতে ছিল, একদৌড়ে এসেই দেখে বদরের রুমে বিথী শুয়ে আছে ঃ বিথী তুই বদর দার বিছানায়! ঃ বদর নাই তাই ঃ দাদা দেখলে বকবে ঃ দাদাও নাই হি-হি-হি—হি অনেকক্ষন হাসাহাসি করে দুজনে।এক পর্যায় বিথী বলল, ঃবদরের বাবা,তোকে অনেক ভারি একটা মালা দিছে--তাই না? ঃ ওইটা মায়ের কাছে-যদি হারিয়ে যায়।চল তোকে দে্খাব এরপর,দুজনেই বদরের রুম থেকে বের হল, রম

রমাদি ০৯

বদরের বাবা রমার মাথায় হাত রেখে আশির্বাদ করতে করতে  বলল, ঃভাল কইরা পড়া লেহা করবা, তুমি যাও মা।মাষ্টার তাইলে আমি যাই গ্যা। কাম ফালায়া আইছি ঠাকুর বলল,ঃনা খেয়ে যেতে পারবেন না ভাই  ঃঠাকুর, আমি বা'তেই খাই,বাইরে খাই না বৌদি আমি যাইগ্যা, বদরে থাকল আপনেগো এহানে আবার একদিন আসমু। বিপিনের মা ঘাড় বাঁকিয়ে বিদায় দিলেন।বাড়ির বাহিরে তখন গ্রামের শত শত লোক, হা করে দাঁড়িয়ে আছে। কখন তাইজ্জা ডাকাত বের হয়, অার চেহারাটা কেহ-বা এক নজর দেখবে বলে।বাবা বাড়ির বাহিরে বের হয়েই একলাফে ঘোড়ার পিঠে চঢ়ে বসলেন, ঘোড়া চি-চি-চিং বলে লাফিয়ে চলল। দুই এক মিনিটের মধ্যে স্কুল মাঠ ফাঁকা হয়ে গেল।বিপিনের মা অতিথি রুমে নিয়ে গেলেন আমাকে-- ঃএই রুমে থাকবা। পাশের রুম বিপিনের, কিছু দরকার হইলে আমাগো কইবা, আর আমি তোমার মাসী লাগী, মাসী কইবা, তোমার বাবা অত মাছ আমাগো জন্য আনছে? ঃ জানি না  রমা সোনার মালা গলায় দিয়ে খুশিতে উঠোনে লাফাচ্ছিল।একবার গলা থেকে খুলছে আর পরছে ।রমাদির মা বলল ঃওটা দে হারাইয়া যাইব। বলা মাত্রই রমাদি লক্ষী মেয়ের মত তাহা মায়ের হাতে দিল। দিয়েই বদরের দিকে এগিয়ে গেল। রুমের মধ্যে প্রবেশ করতেই, ঃ বদর দা,তুমি গিয়েছিলে কেন? বাড়িওয়

রমাদি ০৮

তাইজুদ্দিন সাহেব কথাটা বলা মাত্রই,হেড মাষ্টার মশাই থ-মেরে গেল।হেড মাষ্টার শিক্ষিত মানুষ, অথচ একজন ডাকাতের কথায় মারপ্যাঁচে ফেঁসে গেলেন।উপায়ান্তর না পেয়ে নারায়ন ঠাকুরের মুখের দিকে তাঁকালেন।ঠাকুর মশাই খুব দূর্ত ব্যাক্তি, তিনি তার তাঁকানো দেখেই বুঝতে পারলেন, কিছু একটা বলতে হবে। এবং চটজলদি বলেই ফেললেন, ঃ আপনি যখন বলছেন তবে তাই হবে, বদর এখানেই থাকুক  ঃ বিপিন তুমার মায়রে ডাকো -আমার পোলাডা তোমগো কাছে থাকব! বিপিন মায়ের কাছে যায়, তিনি সব কিছু আগে থেকেই বারান্দা থেকেই শুনতে ছিলো,রমারদির মা বুদ্ধিমতী মহিলা, সে জানে তাঁর এখন আর কিছুই করার নাই। যেহেতু ঠাকুর ও মাষ্টার মশাই কথা দিয়েছেন। তাইতো দরজার সামনে এগিয়েই বললেন, ঃ বিপিনের বাবা তো ঢাকায় আছে তিনি আবার কি বলবে--- ঠাকুর মশাই বলল, ঃ ওটা আমার উপরে ছেড়ে দিন,কোন অসুবিধে নাই। আজ থেকে আপনাগো সংসারে যা খরচ সব তাজ ভাইয়ের।তাহলে এই কথাই রইল বিপিনের মাও বদররে কিন্তু তোমার ছেলে মেয়ের মতই মানুষ করবা।তাজ ভাই খুব ভাল মানূষ।বছরে এক আধবার আইব কি না সন্দেহ । রমা মায়ের আঁচল ধরে দাঁড়িয়ে ছিল, হঠাৎ-ই বদরের বাবা রমাকে বলল, ঃআহো তো মা আমার কাছে রমা তখন ভয়ে জরসর হয়ে সামনে

রমাদি ০৭

ঘোড়ার উচ্চস্বব্দে বাড়ির ভিতর থেকে বিপিনের মা ও রমা এগিয়ে এলো, কিন্ত বিপিনদাকে ঘোড়ার পীঠে দেখে রমাদির মায়ের মুখ অনেকটা ভীতসন্ত্রস্ত মনে হইল তবু আস্তে করে জিজ্ঞেস করল, ঃ বিপেন তুই ওখানে কেন? ঃ মা, উনি বদরের বাবা ঃ নামতে ক- বাড়ির মধ্যে নিয়া আয় বাবা ঘোড়ার উপর থেকেই বিপিনকে বলল, ঃবাবাজি ওই মাইয়াডা ক্যাডা ঃ আমার বোন,বদরের সাথে পড়ে ঃএই মছল্লা,মাছ গুলা ভি,ত,রে দে তাইজুদ্দিন ঘোড়া থেকে নামলেন,কিন্ত ততক্ষনে স্কুল মাঠে শত শত লোক জমা হয়ে গেছে। কেউ কোন কথা বলছে না। স্কুল এর হেড মাষ্টার ও সভাপতি নারায়ন ঠাকুর সামনে এসেই নমস্কার করলেন।এরপর মাষ্টার মশাই বিপিনদের বাড়ি নিয়ে গেল। সাধারনত মুসলমানদের এই গোঁরা সমাজে কেহ ঘরের মধ্য প্রবেশ করান না। কিন্তু নারায়ন ঠাকুর বিপিনদের থাকার ঘরে নিয়ে গিয়ে বসতে দিলো আর বললেন,  ঃতাজভাই বিপিনের বাবায় ঢাকায় থাকে অসুবিধা নাই। আপনে যেভাবে বলবেন সেভাবেই হবে ঃ আমি দেরি করুম না, অহনি যামু পোলাডারে দিয়াই যামু,ওই কাইন্ছা ডা হারামজাদা, ওর কল্লা-ডা কাডবার চাইছিলাম, পোলাডারে দেই হা রাহে না। মাষ্টার মশাই বললঃ আমি দেখে রাখব চিন্তা করবেন না। ঃ বিপেন বাবাজি,বদরে তোমার এই খাইনেই থা'ক?

রমাদি ০৬

দুপুরবেলা বাবা আমি আর বিপিনদা খাবার খেতে বসেছি বিপিন আমার দিকে হা করে তাকিয়ে রইল কারন এত মাছ একসাথে রান্না সে কখনো দেখেনি, বোয়াল মাছ, চিংড়ি,পাবদা,আইর মাছ সব রান্না করেছিল আমার মা। মাঝবয়সী এই মহিলা বাইরের লোকজনের সাথে খুব একটা কথা বলে না তাইতো বিপিনের সাথেও আমার মায়ের তেমন কোন কথা হল না। খাবার শেষে রুমে ফিরতেই বিপিনদা আমাকে বলল,, ঃ বদর এত মাছ কিভাবে জোগার করল ?আমি জীবনে কখনো এত মাছ কাউকে রান্না করতে দেখিনি  ঃ বাবা জলাদ্বার ,বুঝলেন বিপিন দা ঃকাকাবাবু কোথাও যাবে কি, আমি তো আজই বাড়ি ফিরব ঃ ঘোড়া সাজাইতেছে ঃতার মানে? ঃআমাদের দিয়ে আসবে, কিন্ত জানেন জায়গীরদারের বাড়ি আমার ভাল লাগে না। ঃতোমাদের ঘোড়া আছে? ঃআছে মানে,অনেক গুলা ঘোড়া  কথা শেষ হওয়ার আগেই, তিনটে ঘোড়াসহ ঘোড়সোয়ারি ঊঠোনে হাজির। বাবা একজন ঘোড়সোয়ারিকে বলল,, ঃতুই থাক,পোলাডারে আমিই দিয়া আহি, এই টুনি,তর মায়রে পাঞ্জাবিডা দিবার ক--- নদীতে যত রকম মাছ পাওয়া যায়,আমার বাবা সেই সমস্ত মাছ একটা ঘোড়ার পিঠে বাঁধল।এরপর, একটা ঘোড়ায় বিপিনকে উঠানো হল, আরেকটা তে বাবা একলাফে উঠে বসেই বলল, ঃ বদর, তুই আমার এই খানে আয়।(বিপিন)বাবাজি শক্ত কইরা ধইরো,আর কাইন্ছা তুই হ

রমাদি ০৫

ছোনেপাতার বেড়া দেয়া বাড়ির ভিতর থেকে মাতবর সাব বললেন, ঃ ক্যাডা খোঁজে,এইডাই মাতবরের বাড়ি,ভিতরে আহো! বিপিন উঠোনে পা দিতেই মাতবর দেখলেন,ছেলেটা বদরের চেয়ে বয়সে একটু বড়।ধুতি পাঞ্জাবি আর পায়ে স্যান্ডেল পরে দাঁড়িয়েই নমস্কার করল তার পর বলল, ঃ বদর আছে? হেড মাষ্টার সাব পাঠিয়েছে-- ঃতোমারে-তো চিনবার পারলাম না, ঃ আমি বিপিন কাকা বাবু, ঐ স্কুলে দশম শ্রেনির ছাত্র ঃএই টুনি--- --- একটা চেয়ার দে,আর বদররে ডাক  টুনি বদরের ছোট বোন, বয়স আট বছর কিন্ত এখন অবধি স্কুলে পা রাখে নাই। এটা চর অন্চল। গ্রামে যদিও পাঠশালা আছে, কিন্তু এখানকার ছেলেমেয়েরা খুব একটা পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ নাই। মাইনর পাশ, ওটা কোনরকম ভাবে করলেই হল। বদরই এখানকার প্রথম ছাত্র, যিনি মাধ্যমিক শিক্ষার জন্য বাইরে পড়ালেখা করতে গিয়াছে। টুনি চেয়ার উঠোনে রেখে,দৌড়ে গেল নদীর দ্বারে।বিপিন চেয়ারে বসার আগেই জায়গীরদার (কাশেম)এসেই মাতবরের পা জরিয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগল। বিপিন কাশেমকে চেনে না কিন্ত অনুমান করল যে তার বাড়ি তাদের আড়েপাশের গ্রামেই হবে হয়তো। তাইতো আগবারিয়ে কোন কথা বলল না।   ঃ মাতবর সাব আমার ভুল অইছে- মাইয়াডার অসুখ আছিল, ওর সাথে কথা কয়নের সময় পাই ন

রমাদি ০৪

স্কুল ছুটি হয়েছে অনেকক্ষন কিন্ত তবুও হেডমাষ্টার মশাই চেয়ারে হেলান দিয়ে চোঁখ বন্ধ করে বসে আছেন। দপ্তরী নীলু বাহিরে বসে অপেক্ষা করছে কখন স্যার বের হবে।শেষমেশ প্রতিক্ষার প্রহর কাটলো, মাষ্টার মশাই বের হলেন, দপ্তরী পাশে দাঁড়িয়ে অফিস কক্ষ তালাও দিলেন, চাবি হাতে দিতেই দেখলেন , চোঁখ দিয়ে জল গড়িয়ে পরতেছে।দপ্তরী ভাবল কিছু একটা বলি, আবার ভাবল না থাক। তবু আগ বাড়িয়েই বলল, ঃ বিপিনকে পাঠাবেন স্যার?ওর বোন রমা আর বদর, একই ক্লাসে পড়ে!  বিপিনকে ডেকে আনবো?বিপিনের ছোট বোন রমা একটু ব্যতিক্রমী,কিন্ত ওই একমাত্র বদরের সাথে কথা বলে।  নীলুর ধারনা বিপিনকে বদরদের বাড়ি পাঠালেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। নীলুর বকবকানি শোনার পর হেড মাষ্টার সাব কি যেন ভাবল, তার পরই নিলুকে বলল, ঃযাও ডেকে নিয়ে আসো!  নিলু দেরী না করে দ্রুত চলে গেলেন বিপিনদের বাড়ি। মাষ্টার মশাই ততক্ষণ স্কুল বারান্দায় পা- চারি করছিল।যেহেতু স্কুল এর পাশেই বিপিনদের বাড়ি, সেহেতু নীলুর খুব বেশী দেরী হল না বিপিনকে ডেকে আনতে।  বিপিন, স্যারের সামনে দাঁড়িয়ে নমস্কার করতেই স্যার বলল, ঃবদরদের বাড়ি চেন? ঃ স্যার, শুনেছি মাইল দশেক পশ্চিমে ঃতুমি কাল সকালে ওদের ওখানে একটু য

রমাদি ০৩

অঃক মাষ্টার জগৎ মিত্র অন্যান্য স্যারদের উদ্যেশ্য করে বললেন, ঃআপনারা দেখবেন বদর আর স্কুলে আসবে না। সুকুমার বাংলা পড়ান এই সুবাধে তিনিও বললেন  ঃ আপোদটা বিদায় হলেই ভাল তারপর পন্ডিত মশাই বলল,  ঃ জায়গীরদারের বাড়ি কিছুই বলে যায়নি,  সকালে উঠেই বই খাতা ফেলে বাড়ি।ভগমান যা করেন মঙ্গলই করেন  সকাল থেকেই স্কুলে বদরকে নিয়ে যে যার মত বলাবলি করিতেছিল ক্লাসে এখন মধ্য বিরতি,এমন সময় হাঁপাইতে হাঁপাইতে ছুটে এলো নারায়ন ঠাকুর।তিনি এই স্কুলের সভাপতি, হেড মাষ্টার মশাই অফিস রুম থেকে বারান্দায় বের হইতেছিল। মুখোমুখি দুইজনেই নমস্কার বলল।কে আগে নমস্কার বলল তাহা ঠিক বোঝা গেল না। ঠাকুর সাহেব চেয়ারে বসেই হেড মাষ্টারকে বললেন, ঃ তাইজ্জার ছেলেটা নাকি স্কুলে নাই,কি জানি নাম ওর----- তার কথা শেষ হওয়ার আগেই অফিস কক্ষে হুরমুর করে প্রবেশ করলো অন্যান্য শিক্ষকগণ। ঃনারায়ন বাবু, বিষয়টা আমি আজি শুনলাম।সকাল থেকেই স্কুলে ছাত্ররা বলাবলি করিতেছিল! ঃ তো আপনি কি সিদ্ধান্ত নিলেন? অফিস কক্ষে শিক্ষকদের কারো মুখে কোন কথা নেই। হেডমাষ্টার মশাই বলল, ঃআপনি যা ভাল মনে করেন  ঃ আমি তাইজ্জা কে ভয় পাই, তাইজ্জা যদি এখানে আসে -- আমি কিন্ত বলব-হেড মাষ্

রমাদি ০২

দিন দুই অতিবাহিত হইবার পর দেখা গেল বাবা আজ রাতে খুব তারাতারী বাড়ী ফিরেছে।সাধারনত এসময় তিনি বাড়ি ফেরেন না।রাত গভীরে বাড়ি ফেরা তার অনেক পুরোনো অভ্যাস।হ্যারিকেন এর আলোতে খাবার খাওয়ার জন্য খেজুরপাতার মাদুরে বসতেই বাবা বলল, ঃনদীর পাড়ে বইসা থাকস ক্যান?কে'র সাথে কথা কস না, জায়গীরদার তরে কিছু কইছে?ঠিকমতো খায়োন দেয়?তরে কি কিছু কয়? মা জানে বাবার সামনে আমি খুব কম কথা বলি, তাইতো তাঁকে কিছুই বলার সাহস পাইতেছিলাম না। মাথা নিচু করে ভাত নাকেমুখে গিলতেছিলাম, হঠাৎ-ই মা বলে উঠল ঃকয়দিনে ওর মুখটা কেমনে হুকায়ছে দেখছেন?  ঃকাইন্ছার বাচ্চা আমার পোলাডারে দেইহা রাহে না, ওর কল্লা ডা নামায়া দিমু  বদর বুঝতে পারে এখন বাবার সাথে কথা বলা যাবে না। কারন বাবা ভীষন রেগে আছে।আজ রাতেও বাবার সহিত মনের কথা খুলে বলার সাহস হল না।অবশেষে মাথা নিচু করে চুপচাপ ভাত খেয়ে রুমে ফিরল।বদরের বাবা তেমন কিছুই আর জিজ্ঞেস করল না তাঁকে। তাইজুদ্দিন অল্প শিক্ষিত একজন মানুষ, কিন্তু যেমন উদার ঠিক তেমনি তিনি কঠোর। প্রায় সাত ফুট উচ্চতার সুঠাম দেহের অধিকারী এই কালো মানুষটা আসলে একজন দস্যুসর্দার।তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলবে এরকম মানূষ দশক্রোশ এর মধ

রমাদি -১

সুজলা-সুফলা শস্য-শ্যামলা নদীবিধৌত গ্রাম বারবয়লা। এখানকার এক দস্যু পরিবারে বেড়ে ওঠা দুরন্ত এক কিশোর বদর আলী। গ্রামের স্কুল থেকে মাইনর শেষে তার বাবা তাঁকে ভর্তি করিয়ে দেয় বাড়ি থেকে দশ মাইল দূরে। টাংগাইল জেলায় অবস্থিত বাঘিল কে কে উচ্চ বিদ্যালয়। কিন্ত এই পাঠশালাটি নির্মানের পর থেকেই অধ্যবধি সমস্ত ছাত্রছাত্রীই হিন্দু ধর্মালম্বী। কারণ, জানা যায় যে,অনেক বছর আগে এখানে একবার হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা হয়েছিল। ফলে ঐসময় গ্রামের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার জন্য হিন্দু ও মুসলমানগণ নির্মান করেছিল আলাদা আলাদা স্কুল।   যেহেতু বিদ্যালয়টি হিন্দু ছেলেমেয়েদর জন্য, ফলে বদরের জন্যও পাঠ্যে তালিকায় আছে হিন্দুধর্ম শিক্ষা। ধর্মপাঠ্যে, দেব দেবীর কথা বলা হয়েছে,কিন্ত বদর বুঝতে পারে না দেবদেবীই বা কি? পন্ডিত মশাই শ্রেণিতেই বা কি পড়ায়?সহপাঠীদের কারো নিকট কোনকিছু জিজ্ঞাসা করার মত সাহস পায় না এই অল্পভাষী ছেলেটি। কেননা, বদর জানে,সে একজন মুসলমান। আর মুসলমানের সাথে কথা বলা প্রথমদিনই বারণ করেছে এইস্কুলে পড়ালেখা করা প্রতিটি ছাত্র ছাত্রীর বাবা মা।  শ্রেণি ও বিদ্যালয়টিতে একা একা কেটে যায় বেশ কয়েকদিন ।কিন্ত তাঁর  ইহা মোটেও ভাল লাগে না ।