সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

রমাদি ০২

দিন দুই অতিবাহিত হইবার পর দেখা গেল বাবা আজ রাতে খুব তারাতারী বাড়ী ফিরেছে।সাধারনত এসময় তিনি বাড়ি ফেরেন না।রাত গভীরে বাড়ি ফেরা তার অনেক পুরোনো অভ্যাস।হ্যারিকেন এর আলোতে খাবার খাওয়ার জন্য খেজুরপাতার মাদুরে বসতেই বাবা বলল,
ঃনদীর পাড়ে বইসা থাকস ক্যান?কে'র সাথে কথা কস না, জায়গীরদার তরে কিছু কইছে?ঠিকমতো খায়োন দেয়?তরে কি কিছু কয়?
মা জানে বাবার সামনে আমি খুব কম কথা বলি, তাইতো তাঁকে কিছুই বলার সাহস পাইতেছিলাম না। মাথা নিচু করে ভাত নাকেমুখে গিলতেছিলাম, হঠাৎ-ই মা বলে উঠল
ঃকয়দিনে ওর মুখটা কেমনে হুকায়ছে দেখছেন? 
ঃকাইন্ছার বাচ্চা আমার পোলাডারে দেইহা রাহে না, ওর কল্লা ডা নামায়া দিমু
 বদর বুঝতে পারে এখন বাবার সাথে কথা বলা যাবে না। কারন বাবা ভীষন রেগে আছে।আজ রাতেও বাবার সহিত মনের কথা খুলে বলার সাহস হল না।অবশেষে মাথা নিচু করে চুপচাপ ভাত খেয়ে রুমে ফিরল।বদরের বাবা তেমন কিছুই আর জিজ্ঞেস করল না তাঁকে।

তাইজুদ্দিন অল্প শিক্ষিত একজন মানুষ, কিন্তু যেমন উদার ঠিক তেমনি তিনি কঠোর। প্রায় সাত ফুট উচ্চতার সুঠাম দেহের অধিকারী এই কালো মানুষটা আসলে একজন দস্যুসর্দার।তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলবে এরকম মানূষ দশক্রোশ এর মধ্যে খুঁজে পাওয়া কঠিন।ঠিক, এরকম একটা ভয়ভীতির জন্য হিন্দু স্কুলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দিতে বাধ্য হয়েছিল, শিক্ষক ও কমিটিবৃন্দ। 

গোঁরা হিন্দু সমাজের চাপে প্রধান শিক্ষক মহোদয় প্রথমে কয়েকদিন স্কুলে অনুপস্থিত থেকেছেন।সমাজের নিম্ন আয়ের মানূষ গুলোও এই অবিচারের বিরুদ্ধে ফুঁসে ঊঠেছে। পন্ডিত মহোদয় মুখে কুলুপ সেটে বসে আছেন, তার আর কি-বা করার আছে।হঠাৎ-ই স্কুলে  বদরের অনুপস্থিতি, আর এই সুযোগে ছাত্ররা বলাবলি করিতে লাগিল,বদর পালাইছে।বিপিনের ক্লাসমেট জয়রাম, বিপিনকে বললঃ জানোস বদর পালাইছে!

জয়রামের কথা বিপিন অতটা গুরুত্ব দিল না, বিপিন দশম শ্রেনীর  ক্যাপটেন। ছাত্রও ভালো,প্রধান শিক্ষক বিপিনকে নিজের ছেলের মতই মনে করে। ছাত্রদের যেকোন বিষয়ে জানার প্রয়োজন হলে,বিপিনকেই জিজ্ঞেসা করে থাকে।বদর কে নিয়ে শেষ পর্যন্ত আজ শিক্ষকবৃন্দও আলোচনায় জড়িয়ে গেল।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

রমাদি ১০

স্কুলে নিয়মিত এই পোশাকই পরে।বিপিন রীতিনীতিও সব শিখিয়ে দিল।বিপিনের বোন রমাও পাঠ্যে হিন্দুধর্ম শিক্ষা-র যেকোন বিষয় না বুঝলে, তা আলোচনার মাধ্যমে সহযোগীতা করতে থাকে আজকাল বদর, বিপিনের কাজ কর্মেও সহযোগীতা করে। রমার মা,বদরের এই আচার ব্যাবহারে নিজেও গর্বিত। শুরু থেকেই বিপিনের মাকে, বদর মা বলেই ডাকে।গোঁরা সমাজের লোকগুলোও তার আচার ব্যাবহারে সব কিছু ভুলে যায়।অল্পদিনেই স্কুলেও শিক্ষক থেকে শুরু করে সবার প্রিয় পাত্রে পরিনত হলএই ছেলেটি।প্রতিদিন বিকেলে বদর এখন স্কুল মাঠে ফুটবল খেলে হিন্দু ছেলেদের সাথে। রমার বান্ধবী বিথী প্রায় প্রতিদিনই দুই একবার রমাদের বাড়িতে আসে। আজও বদর এই সময় মাঠে ফটবল খেলিতেছে, এই ফাঁকে বিথী বদরের রুমে যায়, গিয়েই রমাকে বলে ঃএই রমা আমি বদরদার ঘরে রমা তখন ওদের বড় ঘরখানাতে ছিল, একদৌড়ে এসেই দেখে বদরের রুমে বিথী শুয়ে আছে ঃ বিথী তুই বদর দার বিছানায়! ঃ বদর নাই তাই ঃ দাদা দেখলে বকবে ঃ দাদাও নাই হি-হি-হি—হি অনেকক্ষন হাসাহাসি করে দুজনে।এক পর্যায় বিথী বলল, ঃবদরের বাবা,তোকে অনেক ভারি একটা মালা দিছে--তাই না? ঃ ওইটা মায়ের কাছে-যদি হারিয়ে যায়।চল তোকে দে্খাব এরপর,দুজনেই বদরের রুম থেকে বের হল, রম

রুদ্র ম আল-আমিন এর কবিতা, যন্ত্রণা

               " যন্ত্রণা "           রুদ্র ম আল-আমিন নিজেকে  নিজের মতন              বিসর্জন দিয়ে।                        আজি বেচে আছি                 এ -ওর ধার দেনা দিয়ে। কন্ঠনালী ছিদ্র আমার                               রপ্ত করেছি           ঝোড়ো হাওয়া উরতে চলা। আর্যছিলাম পালছেড়েছি              থাকতে দিসনি তোদের সাথে, তাই বলে কি হারিয়ে গেছি                সবার থেকে। বলছি কথা মোদের তরে বলছি নাকো ভুলে যেতে                                   যাচ্ছি তবে যাই। রাখবি মনে,, সকল যাতন রইবে প্রানে কাঁদবি তবে                 দিচ্ছি তোরে বর হাসবো আমি কাঁদবে তর, আপন যত, কার বা আপন কে করিল? বলতে পারিস?         নিখিল ভারত, রইল পরে কার বা তরে।

রমাদি ০৪

স্কুল ছুটি হয়েছে অনেকক্ষন কিন্ত তবুও হেডমাষ্টার মশাই চেয়ারে হেলান দিয়ে চোঁখ বন্ধ করে বসে আছেন। দপ্তরী নীলু বাহিরে বসে অপেক্ষা করছে কখন স্যার বের হবে।শেষমেশ প্রতিক্ষার প্রহর কাটলো, মাষ্টার মশাই বের হলেন, দপ্তরী পাশে দাঁড়িয়ে অফিস কক্ষ তালাও দিলেন, চাবি হাতে দিতেই দেখলেন , চোঁখ দিয়ে জল গড়িয়ে পরতেছে।দপ্তরী ভাবল কিছু একটা বলি, আবার ভাবল না থাক। তবু আগ বাড়িয়েই বলল, ঃ বিপিনকে পাঠাবেন স্যার?ওর বোন রমা আর বদর, একই ক্লাসে পড়ে!  বিপিনকে ডেকে আনবো?বিপিনের ছোট বোন রমা একটু ব্যতিক্রমী,কিন্ত ওই একমাত্র বদরের সাথে কথা বলে।  নীলুর ধারনা বিপিনকে বদরদের বাড়ি পাঠালেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। নীলুর বকবকানি শোনার পর হেড মাষ্টার সাব কি যেন ভাবল, তার পরই নিলুকে বলল, ঃযাও ডেকে নিয়ে আসো!  নিলু দেরী না করে দ্রুত চলে গেলেন বিপিনদের বাড়ি। মাষ্টার মশাই ততক্ষণ স্কুল বারান্দায় পা- চারি করছিল।যেহেতু স্কুল এর পাশেই বিপিনদের বাড়ি, সেহেতু নীলুর খুব বেশী দেরী হল না বিপিনকে ডেকে আনতে।  বিপিন, স্যারের সামনে দাঁড়িয়ে নমস্কার করতেই স্যার বলল, ঃবদরদের বাড়ি চেন? ঃ স্যার, শুনেছি মাইল দশেক পশ্চিমে ঃতুমি কাল সকালে ওদের ওখানে একটু য