সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

রমাদি ০৫

ছোনেপাতার বেড়া দেয়া বাড়ির ভিতর থেকে মাতবর সাব বললেন,
ঃ ক্যাডা খোঁজে,এইডাই মাতবরের বাড়ি,ভিতরে আহো!
বিপিন উঠোনে পা দিতেই মাতবর দেখলেন,ছেলেটা বদরের চেয়ে বয়সে একটু বড়।ধুতি পাঞ্জাবি আর পায়ে স্যান্ডেল পরে দাঁড়িয়েই নমস্কার করল তার পর বলল,
ঃ বদর আছে? হেড মাষ্টার সাব পাঠিয়েছে--
ঃতোমারে-তো চিনবার পারলাম না,
ঃ আমি বিপিন কাকা বাবু, ঐ স্কুলে দশম শ্রেনির ছাত্র
ঃএই টুনি--- --- একটা চেয়ার দে,আর বদররে ডাক 

টুনি বদরের ছোট বোন, বয়স আট বছর কিন্ত এখন অবধি স্কুলে পা রাখে নাই। এটা চর অন্চল। গ্রামে যদিও পাঠশালা আছে, কিন্তু এখানকার ছেলেমেয়েরা খুব একটা পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ নাই। মাইনর পাশ, ওটা কোনরকম ভাবে করলেই হল। বদরই এখানকার প্রথম ছাত্র, যিনি মাধ্যমিক শিক্ষার জন্য বাইরে পড়ালেখা করতে গিয়াছে। টুনি চেয়ার উঠোনে রেখে,দৌড়ে গেল নদীর দ্বারে।বিপিন চেয়ারে বসার আগেই জায়গীরদার (কাশেম)এসেই মাতবরের পা জরিয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগল। বিপিন কাশেমকে চেনে না কিন্ত অনুমান করল যে তার বাড়ি তাদের আড়েপাশের গ্রামেই হবে হয়তো। তাইতো আগবারিয়ে কোন কথা বলল না।  
ঃ মাতবর সাব আমার ভুল অইছে- মাইয়াডার অসুখ আছিল, ওর সাথে কথা কয়নের সময় পাই নাই।

চোখে জরজর করে জল গরিয়ে পরলেও কাকাবাবু সেদিকে দৃষ্টি দিচ্ছে না।শুধু একবার মাথা দিয়ে ইশারা করল যে, বিপিন যেন চেয়ারে বসে। বিপিনও চেয়ারে বসে মাথা নিচু করে রইল। জায়গীরদারের কাঁন্না থামছেই না মাতবর তখন ক্রোধে অগ্নিমূর্তি হয়ে বললেনঃ তর কাঁন্দা থামা--।
ঃহ বাবাজি, কথা কইবার চাইছি, তুমি এতপথ আসলা কি কইরা।
কথা শেষ না হতেই বদর এসেই বলল; বিপিন দা আপনে ----

এরপর, বিপিনকে নিয়ে গেল বদর তার রুমের মধ্যে। বেশ খানিকক্ষণ পর বদর ও বিপিন নদীতে গেল তাহারা স্নান করতে। এর আগে বিপিন কখনও নদীতে স্নান করেনি। নদীর জলে স্নান করার আনন্দ বিপিন এই প্রথম অনুভব করল । গ্রামটা ছবির মতোই সুন্দর, পশ্চিমে যমুনানদী, উত্তরে দক্ষিণে ফসলের মাঠ আর পুবে মানুষের বসতি।পাখির কলতান এ এক মনোরম পরিবেশ।
০৫

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

রমাদি ১০

স্কুলে নিয়মিত এই পোশাকই পরে।বিপিন রীতিনীতিও সব শিখিয়ে দিল।বিপিনের বোন রমাও পাঠ্যে হিন্দুধর্ম শিক্ষা-র যেকোন বিষয় না বুঝলে, তা আলোচনার মাধ্যমে সহযোগীতা করতে থাকে আজকাল বদর, বিপিনের কাজ কর্মেও সহযোগীতা করে। রমার মা,বদরের এই আচার ব্যাবহারে নিজেও গর্বিত। শুরু থেকেই বিপিনের মাকে, বদর মা বলেই ডাকে।গোঁরা সমাজের লোকগুলোও তার আচার ব্যাবহারে সব কিছু ভুলে যায়।অল্পদিনেই স্কুলেও শিক্ষক থেকে শুরু করে সবার প্রিয় পাত্রে পরিনত হলএই ছেলেটি।প্রতিদিন বিকেলে বদর এখন স্কুল মাঠে ফুটবল খেলে হিন্দু ছেলেদের সাথে। রমার বান্ধবী বিথী প্রায় প্রতিদিনই দুই একবার রমাদের বাড়িতে আসে। আজও বদর এই সময় মাঠে ফটবল খেলিতেছে, এই ফাঁকে বিথী বদরের রুমে যায়, গিয়েই রমাকে বলে ঃএই রমা আমি বদরদার ঘরে রমা তখন ওদের বড় ঘরখানাতে ছিল, একদৌড়ে এসেই দেখে বদরের রুমে বিথী শুয়ে আছে ঃ বিথী তুই বদর দার বিছানায়! ঃ বদর নাই তাই ঃ দাদা দেখলে বকবে ঃ দাদাও নাই হি-হি-হি—হি অনেকক্ষন হাসাহাসি করে দুজনে।এক পর্যায় বিথী বলল, ঃবদরের বাবা,তোকে অনেক ভারি একটা মালা দিছে--তাই না? ঃ ওইটা মায়ের কাছে-যদি হারিয়ে যায়।চল তোকে দে্খাব এরপর,দুজনেই বদরের রুম থেকে বের হল, রম

রুদ্র ম আল-আমিন এর কবিতা, যন্ত্রণা

               " যন্ত্রণা "           রুদ্র ম আল-আমিন নিজেকে  নিজের মতন              বিসর্জন দিয়ে।                        আজি বেচে আছি                 এ -ওর ধার দেনা দিয়ে। কন্ঠনালী ছিদ্র আমার                               রপ্ত করেছি           ঝোড়ো হাওয়া উরতে চলা। আর্যছিলাম পালছেড়েছি              থাকতে দিসনি তোদের সাথে, তাই বলে কি হারিয়ে গেছি                সবার থেকে। বলছি কথা মোদের তরে বলছি নাকো ভুলে যেতে                                   যাচ্ছি তবে যাই। রাখবি মনে,, সকল যাতন রইবে প্রানে কাঁদবি তবে                 দিচ্ছি তোরে বর হাসবো আমি কাঁদবে তর, আপন যত, কার বা আপন কে করিল? বলতে পারিস?         নিখিল ভারত, রইল পরে কার বা তরে।

রমাদি ০৪

স্কুল ছুটি হয়েছে অনেকক্ষন কিন্ত তবুও হেডমাষ্টার মশাই চেয়ারে হেলান দিয়ে চোঁখ বন্ধ করে বসে আছেন। দপ্তরী নীলু বাহিরে বসে অপেক্ষা করছে কখন স্যার বের হবে।শেষমেশ প্রতিক্ষার প্রহর কাটলো, মাষ্টার মশাই বের হলেন, দপ্তরী পাশে দাঁড়িয়ে অফিস কক্ষ তালাও দিলেন, চাবি হাতে দিতেই দেখলেন , চোঁখ দিয়ে জল গড়িয়ে পরতেছে।দপ্তরী ভাবল কিছু একটা বলি, আবার ভাবল না থাক। তবু আগ বাড়িয়েই বলল, ঃ বিপিনকে পাঠাবেন স্যার?ওর বোন রমা আর বদর, একই ক্লাসে পড়ে!  বিপিনকে ডেকে আনবো?বিপিনের ছোট বোন রমা একটু ব্যতিক্রমী,কিন্ত ওই একমাত্র বদরের সাথে কথা বলে।  নীলুর ধারনা বিপিনকে বদরদের বাড়ি পাঠালেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। নীলুর বকবকানি শোনার পর হেড মাষ্টার সাব কি যেন ভাবল, তার পরই নিলুকে বলল, ঃযাও ডেকে নিয়ে আসো!  নিলু দেরী না করে দ্রুত চলে গেলেন বিপিনদের বাড়ি। মাষ্টার মশাই ততক্ষণ স্কুল বারান্দায় পা- চারি করছিল।যেহেতু স্কুল এর পাশেই বিপিনদের বাড়ি, সেহেতু নীলুর খুব বেশী দেরী হল না বিপিনকে ডেকে আনতে।  বিপিন, স্যারের সামনে দাঁড়িয়ে নমস্কার করতেই স্যার বলল, ঃবদরদের বাড়ি চেন? ঃ স্যার, শুনেছি মাইল দশেক পশ্চিমে ঃতুমি কাল সকালে ওদের ওখানে একটু য