সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

রমাদি -১

সুজলা-সুফলা শস্য-শ্যামলা নদীবিধৌত গ্রাম বারবয়লা। এখানকার এক দস্যু পরিবারে বেড়ে ওঠা দুরন্ত এক কিশোর বদর আলী। গ্রামের স্কুল থেকে মাইনর শেষে তার বাবা তাঁকে ভর্তি করিয়ে দেয় বাড়ি থেকে দশ মাইল দূরে। টাংগাইল জেলায় অবস্থিত বাঘিল কে কে উচ্চ বিদ্যালয়। কিন্ত এই পাঠশালাটি নির্মানের পর থেকেই অধ্যবধি সমস্ত ছাত্রছাত্রীই হিন্দু ধর্মালম্বী। কারণ, জানা যায় যে,অনেক বছর আগে এখানে একবার হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা হয়েছিল। ফলে ঐসময় গ্রামের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার জন্য হিন্দু ও মুসলমানগণ নির্মান করেছিল আলাদা আলাদা স্কুল।  

যেহেতু বিদ্যালয়টি হিন্দু ছেলেমেয়েদর জন্য, ফলে বদরের জন্যও পাঠ্যে তালিকায় আছে হিন্দুধর্ম শিক্ষা। ধর্মপাঠ্যে, দেব দেবীর কথা বলা হয়েছে,কিন্ত বদর বুঝতে পারে না দেবদেবীই বা কি?
পন্ডিত মশাই শ্রেণিতেই বা কি পড়ায়?সহপাঠীদের কারো নিকট কোনকিছু জিজ্ঞাসা করার মত সাহস পায় না এই অল্পভাষী ছেলেটি। কেননা, বদর জানে,সে একজন মুসলমান। আর মুসলমানের সাথে কথা বলা প্রথমদিনই বারণ করেছে এইস্কুলে পড়ালেখা করা প্রতিটি ছাত্র ছাত্রীর বাবা মা।

 শ্রেণি ও বিদ্যালয়টিতে একা একা কেটে যায় বেশ কয়েকদিন ।কিন্ত তাঁর  ইহা মোটেও ভাল লাগে না । এই কিশোর ছেলেটির একাকীত্ব এখানে নিজেকে মোটেও মানিয়ে নিতে পারছে না। সে মনে মনে ভাবতে থাকে বাড়ী গিয়ে বাবাকে সবকিছু খুলে বলবে।অবশেষে মনে মনে বাড়ি যাইবার সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলল,পরেরদিন বইখাতা জায়গিরদারেরর বাড়ি রেখে ছুটে চলল গ্রামের বাড়ি।দুপুরবেলা বদরকে ঊঠোনে দেখেই মায়ের কাঁন্না আর ধরে রাখতে পারলো না। মা দু'হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলল,
ঃ কি কইরা আইলি এ-পথ?-এই টুনি দ্যাখ তর দাদা আইছে। 

বদর ফ্যালফ্যাল করে তাঁকিয়ে আছে মায়ের চোঁখের দিকে, তার চোঁখে জল টলমল করিতেছিল।কিন্ত,মাকে কোন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে চলে গেল সোজা তাঁর থাকার সেই পুরোনো রুমে।বদর অনেকটা পথ পায়ে হেটে  ক্লান্ত ছিল।তাই সে'রাত্রে বাবার সাথে দেখা না করেই তারাতারি ঘুমিয়ে পরলো।সকালে ঘুম থেকে উঠেই ছুটে যায় নদীর দ্বারে, দুপুরের দিকে বাড়ি এলো। কিন্ত খাওয়াা দাওয়া যেন একেবারেই ভূলে গিয়েছে। 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

রমাদি ১০

স্কুলে নিয়মিত এই পোশাকই পরে।বিপিন রীতিনীতিও সব শিখিয়ে দিল।বিপিনের বোন রমাও পাঠ্যে হিন্দুধর্ম শিক্ষা-র যেকোন বিষয় না বুঝলে, তা আলোচনার মাধ্যমে সহযোগীতা করতে থাকে আজকাল বদর, বিপিনের কাজ কর্মেও সহযোগীতা করে। রমার মা,বদরের এই আচার ব্যাবহারে নিজেও গর্বিত। শুরু থেকেই বিপিনের মাকে, বদর মা বলেই ডাকে।গোঁরা সমাজের লোকগুলোও তার আচার ব্যাবহারে সব কিছু ভুলে যায়।অল্পদিনেই স্কুলেও শিক্ষক থেকে শুরু করে সবার প্রিয় পাত্রে পরিনত হলএই ছেলেটি।প্রতিদিন বিকেলে বদর এখন স্কুল মাঠে ফুটবল খেলে হিন্দু ছেলেদের সাথে। রমার বান্ধবী বিথী প্রায় প্রতিদিনই দুই একবার রমাদের বাড়িতে আসে। আজও বদর এই সময় মাঠে ফটবল খেলিতেছে, এই ফাঁকে বিথী বদরের রুমে যায়, গিয়েই রমাকে বলে ঃএই রমা আমি বদরদার ঘরে রমা তখন ওদের বড় ঘরখানাতে ছিল, একদৌড়ে এসেই দেখে বদরের রুমে বিথী শুয়ে আছে ঃ বিথী তুই বদর দার বিছানায়! ঃ বদর নাই তাই ঃ দাদা দেখলে বকবে ঃ দাদাও নাই হি-হি-হি—হি অনেকক্ষন হাসাহাসি করে দুজনে।এক পর্যায় বিথী বলল, ঃবদরের বাবা,তোকে অনেক ভারি একটা মালা দিছে--তাই না? ঃ ওইটা মায়ের কাছে-যদি হারিয়ে যায়।চল তোকে দে্খাব এরপর,দুজনেই বদরের রুম থেকে বের হল, রম

রুদ্র ম আল-আমিন এর কবিতা, যন্ত্রণা

               " যন্ত্রণা "           রুদ্র ম আল-আমিন নিজেকে  নিজের মতন              বিসর্জন দিয়ে।                        আজি বেচে আছি                 এ -ওর ধার দেনা দিয়ে। কন্ঠনালী ছিদ্র আমার                               রপ্ত করেছি           ঝোড়ো হাওয়া উরতে চলা। আর্যছিলাম পালছেড়েছি              থাকতে দিসনি তোদের সাথে, তাই বলে কি হারিয়ে গেছি                সবার থেকে। বলছি কথা মোদের তরে বলছি নাকো ভুলে যেতে                                   যাচ্ছি তবে যাই। রাখবি মনে,, সকল যাতন রইবে প্রানে কাঁদবি তবে                 দিচ্ছি তোরে বর হাসবো আমি কাঁদবে তর, আপন যত, কার বা আপন কে করিল? বলতে পারিস?         নিখিল ভারত, রইল পরে কার বা তরে।

রমাদি ০৪

স্কুল ছুটি হয়েছে অনেকক্ষন কিন্ত তবুও হেডমাষ্টার মশাই চেয়ারে হেলান দিয়ে চোঁখ বন্ধ করে বসে আছেন। দপ্তরী নীলু বাহিরে বসে অপেক্ষা করছে কখন স্যার বের হবে।শেষমেশ প্রতিক্ষার প্রহর কাটলো, মাষ্টার মশাই বের হলেন, দপ্তরী পাশে দাঁড়িয়ে অফিস কক্ষ তালাও দিলেন, চাবি হাতে দিতেই দেখলেন , চোঁখ দিয়ে জল গড়িয়ে পরতেছে।দপ্তরী ভাবল কিছু একটা বলি, আবার ভাবল না থাক। তবু আগ বাড়িয়েই বলল, ঃ বিপিনকে পাঠাবেন স্যার?ওর বোন রমা আর বদর, একই ক্লাসে পড়ে!  বিপিনকে ডেকে আনবো?বিপিনের ছোট বোন রমা একটু ব্যতিক্রমী,কিন্ত ওই একমাত্র বদরের সাথে কথা বলে।  নীলুর ধারনা বিপিনকে বদরদের বাড়ি পাঠালেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। নীলুর বকবকানি শোনার পর হেড মাষ্টার সাব কি যেন ভাবল, তার পরই নিলুকে বলল, ঃযাও ডেকে নিয়ে আসো!  নিলু দেরী না করে দ্রুত চলে গেলেন বিপিনদের বাড়ি। মাষ্টার মশাই ততক্ষণ স্কুল বারান্দায় পা- চারি করছিল।যেহেতু স্কুল এর পাশেই বিপিনদের বাড়ি, সেহেতু নীলুর খুব বেশী দেরী হল না বিপিনকে ডেকে আনতে।  বিপিন, স্যারের সামনে দাঁড়িয়ে নমস্কার করতেই স্যার বলল, ঃবদরদের বাড়ি চেন? ঃ স্যার, শুনেছি মাইল দশেক পশ্চিমে ঃতুমি কাল সকালে ওদের ওখানে একটু য