সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

গাঙশালিক

গাঙশালিক-১

সভ্যতার কথা বলিতে গেলে ধর্মের গুণকীর্তন আমাদের সন্মুখে আসিয়া দাড়ায়। ইহা আমাদের অস্বীকার করিবার লেশমাত্র নাই। আজকের মানব সমাজে ধর্মকে অস্বীকার করে এমন মানুষকে খুঁজিয়া পাওয়া দুরহ্। কারণ,যদি নাস্তিকতা নিয়ে কথা বলি, সেইখানেও দেখা যাইবে, সেই ব্যাক্তির নিজস্ব একটা ধর্ম রহিয়ছে।ঠিক সেইরুপ আদিকাল হইতে অধ্যবধি ঋৃষিদেরও একটা ধর্ম রহিয়াছে, 
কৃষ্ণ কুমার বটতলা ঋৃষিপল্লীতে বেড়ে উঠা একজন কিশোর,বয়স সবে মাত্র তেরো বছর।সে খুব সকালে ঘুম থেকে উঠিবার পর তাহার বাবা কহিল, 
ঃকিষনো বাইরে যাইস না। আইজ কৈজুরী থেইক্যা তরে দেখতে আইসবো
ঃমামু আইসবো?
কৃষ্ণ-র মা,ঝুপড়ী থেকে বাহির হইয়া কৃষ্ণের মাথায় হাত রাখিয়াই কহিল,
ঃতরে বিয়া দিমু, তর নিগা দুগ্গার মত বউ আনমু---
ঃতুমার নাগাল অইব তো?
গোপাল আর সাবিত্রী খিলখিল করিয়া হাসিতে লাগিল। গোপাল মনে মনে ভাবিল,তাহার ছেলের বয়েস কম হইলেও বিবাহের জ্ঞান হইয়াছে। গোপালের পরনের লুঙ্গীখানি মার্কিন কাপড়ের আর সাবিত্রীর শরীরে নয় হাত লম্বা লাল কালো প্রিন্টখচিত একখান শাড়ী জরানো ছিল।কৃষ্ণ তাহাদের একমাত্র সন্তান। যদিও সে সচরাচর বাবার ছেঁড়া লুঙ্গীই তাহা টুকরো করিয়া পরিয়া থাকে। কিন্ত সে দেখল,রাত্রে বাবা তাহার জন্য একখানা হাফপ্যান্ট আর জামা কিনিয়া আনিয়াছিল। তাহা হাতে দিতেই কৃষ্ণ খুশিতে ভরিয়া উঠিল। কৃষ্ণ ছেঁড়া একফালি পুরোনো লুঙ্গীর উপর দিয়েই হাফ প্যান্টটি পরিতে চেষ্টা করিতে লাগিল।কিন্ত তাহা পরিতে ব্যার্থ হইলে  গোপাল আবারো হাসিতে লাগিল। এরপর কাছে টানিয়া ছেঁড়া কাপড়ের টুকরো কোমড় থেকে খুলিবার উপক্রম হইলে কৃষ্ণ তাহাতে বাঁধা দিতেই কহিল, 
ঃসাবু দ্যাখ তর পোলায় সরম পাইতেচে,
ঃএইডা কিবা কইরা পরে আমি জানি না তো
এরপর, কৃষ্ণর মা পেছন থেকে তাহার হাত দুইখানি ধরিয়া রহিল। গোপাল ছেলেকে সন্তর্পণে ইংলিশ প্যান্ট পরানো শেষ করিলে সাবিত্রী কহিল,

                   (০১)





ঃদেখছাও ওরে কি সুন্দর দ্যাহা যায়।
ঃসাবু!নিতাই ওরে চেনে, ওর মামুর হাতে একবার গেছিলো না। হের জন্যিই তো আসতেছে ।
ঃ রামে আসপো?
ঃবাজার থেইক্যা কি কি আনমু, ট্যাহা দ্যাও,
সাবিত্র ঝুপড়ির মধ্যে প্রবেশ করিয়া টিনের কৌটাটি খুলল এবং তাহা থেকে এক,দুই,পাঁচ টাকার নোট, এবং খুচরো পয়সা নিয়ে ঘরের দরজায় দাড়াইল।টাকাগুলো গোপালের হাতে দেওয়ার পর তাহা গুণিয়া দেখিল, মোটামুটি ত্রিশ টাকার এক টাকা কম।সাবিত্রীকে জিগাইল, 
ঃকিষনোরে নিয়া যাই?
বলা মাত্রই সে আবারো ঝুপড়ীতে প্রবেশ করিয়া ম্যারাদোনা চেক হাতলের একখানি পলিব্যাগ কৃষ্ণর হাতে ধরিয়া দিল।কৃষ্ণ নতুন জামা আর প্যান্ট পড়িয়া বাবার নিকট দাঁড়াইয়া ছিল। এই অল্পবয়সী ছেলেটি বাবার সহিত বাজারে যাইবে বলে আনন্দে নাচিতেছিল। মা কহিল,
ঃরামু আইসপো কষার মাংস কিনো, ,মোচ, আদা, এক সের চেকোন চাইল কিনো। 
ঃতাইলি আরো দশটা ট্যাহা দ্যাও,

এরপর সাবিত্রী ঘর থেকে দশ টাকার আরো একটি নোট তাহার হাতে দিল। কিন্ত যাইবার কালে কৃষ্ণকে কহিল,,
ঃকিষনো তারাতারি আইসবি ওরা কিন্ত আইসা পরবো।

কৃষ্ণ বাবার পেছনে হাটতে হাটতে বাজার অবধি পৌছাইল। ঋৃষিপল্লী থেকে মাত্র দশ মিনিটের পথ। কষাই আজ ভেড়ার মাংস নিয়ে বসে আছে। খাসী কাটে নাই। বটতলা বাজারটি যদিও নতুন কিন্ত আশে পাশে তিন চার মাইলের মধ্যে কোন হাট বাজার নাই। তাইতো সবই এখানে পাওয়া যায়।
গোপালকে কষাই আগে থেকেই চেনে। কিন্ত তাহার সামনে  দাঁড়াতেই বলল,
ঃগোস্ত নিবি? আত্বীয় আসবো?
ঃ এক পোয়া, পোলা দেখবার আসবো ম্যায়ার বাপ,
ঃকার ছাওয়াল রে?  এই ছাওয়াল তর?
ঃহ -অরেই দেখতে আইসপো
ঃঅই হুমুন্দির ছাওয়াল, বউ নিয়া কি তুই হইবি?
ওইটুকু ছাওয়াল বিয়ার কি বোঝেরে। সালারে থাপ্পরদিয়া গুরাইয়া দিমু ---

মাংসের দোকানের পাশেই চন্ডি আর হরির পানের দোকান। কষাই এত জোরে ধমক দিতেছিল যে আশেপাশের সকলেই গোপাল আর কষাইয়ের মুখের দিকে হা করে তাঁকিয়ে রইল।

                   
                       (০২)


কষাই রফিক মিয়া বেশ স্বাস্থ্যকর একজন ব্যাক্তি তা ছাড়া এখানকার প্রভাবসম্পন্ন ব্যাক্তির বংশধর হওয়ায় কেহ কোন কথা বলিতে সাহস পাইল না।এরপর ভেড়ার রানে থেকে কিছু মাংস কেটে ধারালো চাপাতির মত ছুরিখানা দিয়ে কেটে কুচিকুচি করিয়া দাড়িপাল্লায় উঠাইলো। গোপাল দেখিল আধা সের ওজনের পাথর বামপাল্লায় তুলিয়া দিতেই কহিল,
ঃদাদা এক পোয়া চাইছি
ঃঅই হুমুন্দির ছাওয়াল আমি বয়রা, যে কানে হুনি না। তুই দশ টেকাই দে

গোপাল দশ টাকার নোটটা তাহার হাতে দিতে ভয় পাইতেছিল। কিন্ত মনে মনে খুব খুশি হইতেছিল যে আজ রাতে ভাং খাইবে না বরং  আরো তিনটা টাকা বাজার থেকে সরায়ে পাঁচ টাকার মদ কিনিবে। গোপালের ছেলের বিবাহের বিষয়টি একেএকে কাঁচাবিক্রেতা, মাছবিক্রেতা, এবং খদ্দেরদের মাঝেও তাহা জানাজানি হইল। কিন্ত ইহা লইয়া কাহারো কোন প্রকার মাথাব্যথা নাই।গোপাল আদা,মরিচ,চাল,নুন বিড়ি কিনিবার পর ছেলেকে কহিল,
ঃ নিয়া যা-- আমি পরে আইসি, নিবার পারবি?

কৃষ্ণর জন্য পলিথিনের ব্যাগটা বহন করা খুব কষ্টসাধ্য ব্যাপার না। কিন্ত সে ভাবিল, তাহার নতুন জামাটিতে যদি দাগ লেগে যায়। তাইতো বাবাকে কহিল,
ঃমাথায় তুইলা দ্যাও, জামায় দাগ ভরবো। মামু দেখলি কোবো কি? 

গোপাল মনে মনে ভাবল, ছেলের যথেষ্ট বুদ্ধি হয়েছে। তাইতো ছেলের সহিত কোন কথা বলিল না কিন্ত পলিথিন ব্যাগের হাতলে শক্ত করিয়া হিট্টু মারিল যেন কিছু রাস্তায় না পরিয়া যায়।এরপর পলিথিনের ব্যাগটি কৃষ্ণর মাথায় তুলে দিয়ে  অনেকক্ষন তাহার পথের দিকে তাঁকিয়ে রইল।  যখন পথের বাঁক ঘুরিবার কালে কৃষ্ণকে আর দেখা গেল না সেই সময় গোপাল বিড়ির প্যাকেট ছিড়িয়া একটা বিড়ি মুখে নিয়ে টানতে টানতে এগিয়ে চলল বেতিল গ্রামের দিকে। কারন ওখানে গাঁজা ভাং চোলাই মদ সব বিক্রি হয় নদীর ধারে।নদীরপাড়ে পৌছানো মাত্রই গোপালকে দেখে ভাং বিক্রেতা এগিয়ে এলো, কিন্ত সে জিজ্ঞাসা করিতেই কহিল,   
ঃনগেন দা আইসপো তাই দাড়াইয়া আছি

 
        (০৩)


গোপাল তাহাকে মিথ্যা কথা বলিল। কারন সে ভাং এর পরিবর্তে মদ কিনিতে আসিয়াছেন।
অনেকক্ষণ দাড়িয়ে থাকার পরও যখন মদ বিক্রেতাকে চোঁখে পরল না তখন বিড়ি টানতে টানতে বাড়ির দিকে পা বাড়াইল।

গোপাল বাজারে যাইবার পরই সাবিত্রী ঘরদ্বোর পরিস্কার করিয়া ফেলেছে।কৃষ্ণ বাজার থেকে ফেরা মাত্রই তাহার মা রান্না বান্নার জন্য ব্যাস্ত হইয়া পরিল। সেইসময় কৃষ্ণ-র সমবয়সী বাসুদেব আসিল,বাসুদেব এই ঋষিপল্লীতে মা বাপহীন একমাত্র অনাথ কিশোর। মা বাপ গত হইয়াছে বেশ কয়েক বছর ধরে। সারাদিন অধিকাংশ সময় বটতলা বাজারেই থাকে। ধনাট্য মুসলিম লোকদের বাজার সামগ্রী বাড়ি বাড়ি পৌছে দেয়। তাহার বিনিময় যে অর্থ পাইয়া থাকে তাহা দিয়ে দুইবেলা কোন রকম খেয়ে পরে বেচে থাকে। সে নিয়ম করে প্রতিদিন দুপুরে একবার করিয়া নিজেই ভাত রাধিয়া থাকে। দুপুরবেলা খাইবার পর যেটুকু খাবার থাকে তাহা রাত্রীতে খেয়েই বাবার রেখে যাওয়া ঝুপড়ীর মধ্যে রাতটুকু কাটায়।
তার পর সকালে আবার বাহির হয় বাজারে কুলির কাজ করিবার জন্য।
কিন্ত আজ কৃষ্ণদের বাড়িতে লোকজন আসিবে তাইতে বাজারে সময় না দিয়ে সে আসিয়াছে এইখানে।  
কৃষ্ণ-র মা তখন রান্না নিয়ে ব্যাস্ত, কৃষ্ণকে কহিল,
ঃবউ দেখছা তুই? ওরে নিয়া কোন ঘরে থাকপি?
কৃষ্ণ বিবাহ কি তাহা তাহার জানা নাই,  বাসুদেব যদিও তার সমবয়সী কিন্ত কুলির কাজ করিতে করিতে লোকজনের কিল থাপ্পর খাইয়া সে অনেক বিষয়েই কম বেশী তাহা বুঝিতে পারে। কৃষ্ণ বিড়ি খায় না কিন্ত বাসু সকলের সামনেই বিড়ি খায়। তাইতো মাসীর নিকট থেকে ম্যাচবাক্স আনিয়া বিড়িতে আগুন লাগাইয়াই টানতে টানতে আবারো কহিল,
ঃবাবা থাকলি আমাকেও বিয়া দিতো,
কৃষ্ণ-র মা দুর থেকে শুনতেই কহিল
ঃকিষনোর বিয়া ওউক, তারপর তর জন্যও খুজমুনি,
বাসু লজ্জায় লাল হইয়া গেল। কিন্ত মুখপোড়া এই ছেলেটি লোকের কাজ করিতে করিতে বেশ পটু হই্য়া গেছে। 
তাইতো তাহাকে কহিল,
ঃহ্যায় যেনো তুমার মত ভালবাসে ।
ঃতয় আমারেই বিয়া কর, জাইরা পোলা, খালি বড় মাইনসের নাগাল কতা--
                     (০৪)

সাবিত্রী হি হি হি করিয়া হাসিতে লাগিল। তাহার বয়স এখন পঁচিশ ছুইছুই। কৃষ্ণ মায়ের কথার কিছুই বুঝিতে পারিল না তবু মায়ের সাথে সেও হাসিতেছিল। কিন্ত বাসুর মুখটি মুহুর্তে কালো হইয়া গেল। কারন, সাবিত্রী তাহার মায়ের মত তাইতো এতদিন ধরিয়া তাহাকে মাসী বলিয়া ডাকে। বাসুদেব বিড়ি টানিতে টানিতে কহিল, 
ঃমাসী অও নাহলি তাই করতুম বলিয়াই দৌড়ে পালালো।

ঋষিপল্লীতে চল্লিশ ঘর লোকের বসবাস। ছেলেপুলে মিলে মোটামুটি শখানেক লোকজন বসবাস এখানে। সারি সারি ঝুপড়ীঘর,ঘরগুলি  বাঁশ চারকোনায় পোতা দেয়া সারের পলিথিন ব্যাগ আর পাটসোলা বিছাইয়া  চাল বানানো প্রত্যেকেরই। বেড়াগুলো কলার ফেতরা কাঁশের ডাগর কারো কারো ঘরে সারের কাগজ দেয়া। একবিঘে সম্পত্তির উপর গড়ে উঠা ঝুপড়ি গুলো ঠাসাঠাসি। কিন্ত এ নিয়ে কারো কোন আক্ষেপ নাই। কারন জন্মগত ভাবে তারা এই পরিবেশে থাকতে অব্যস্ত। 
দিনের বেলা সাধারনত এখানকার পুরুষদের খুব একটা দেখা মেলে না। কারন রাত পোহাইবার সাথে সাথে বারো তেরা বৎসরের ছেলে ও বয়স্ক পুরুষগন কাঁথে ছোট্র বাঠের বাক্স লইয়া ছুটে যায় দুর দুরান্ত গ্রাস গুলোতে। তাহারা বাড়ি থেকে বাহির হইবার সময়ই সামান্য ছটাক খানে মুরি ও একচিমটি গুর সংগে নিয়া বাহির আর তা  দুপুরবেলা নির্জন কোন গাছতলায় বসিয়া আহার করিয়া থাকে। 
 গোপাল বাড়ি ফিরিল,দেখিল  চৈত্রীমাসের মাথার উপর খাড়া রোদে বসিয়া সাবিত্রী রান্না শেষ করিবার। কৃষ্ণ তখন ঝুপড়ির দরজাজায় পিরি পাতিয়া বসে আছে। অন্যদিন হলে হয়তো সারা শরীরে মাটি লাগিয়া থাকিত। কিন্ত বাড়িতে মামু আসব তাহার জন্য আর বাড়ি থেকে বাহির হইল না 
গোপাল কহিল,
ঃ তোমার রান্ধুন  অইলো?আমি পাগারে স্নান কইরা আইসি। তুই স্নান করবি নি?
ঃতুই স্নান কইরা আইসবু তারপর

সাবিত্রী ঋষিপল্লীর মানুষ। কিন্ত তার চেহারা এতটাই সুন্দর যে অমন রুপবতী মহিলা যে দুচার
                  

             ( ৫)

দুচার গ্রাম খুজিয়াও হয়তো পাওয়া যাইবে না। 
দুপুরবেলা রামু ও নিতাইকে
সংগে নিয়া গোপালের বাড়িতে আসিল।এরপর কৃষ্ণকুমার মামুর সহিত অনেক গল্পগুজোবে মাতিয়া উঠিল। খাওয়া দাওয়া সেষ করিয়া নিতাই কৃষ্ণকে কাছে ডাকিয়া নাম জিজ্ঞাস করিতেই কহিল,তাহার নাম কেষ্টু। বাড়ন্ত এই ছেলেটির চেহারা দেখিয়া মনে ভাবিল সতীর সহিত বেশ মানাইব তাঁরে। একারনে কৃষ্ণকে তেমন কিছুই আর বলিল না।

হাড্ডিসার এই মানুষটার বয়স যদিও ত্রিশ কিন্ত তবু তাহার মাথার চুল সবই খসিয়া পরেছে।সে একখানি সাদা ধুতির সহিত পুরোনো একটি পান্জাবী পরিয়া ছিল। সতী তাহার একমাত্র মেয়ে। 
নতুন বেহাইকে নিয়ে গোপাল এরপর চা খাইবার জন্য বাজার যাইতে পীড়াপীড়ি করিল। কিন্ত নিতাই তাহাতে সায় দিল না। গোপাল মনে মনে ভাবিল, কেস্টোকে হয়তো তাহার পছন্দ হয় নাই। তাইতো অনেক ভাবিয়া শেষমেষ কহিল,
ঃকিসনোর বয়স কম। আমার তো একটাই ছোল, তু ভাবিস না, আমি সতীরে ম্যায়া মতই দেখমু। তা বেহাই রাজী তো?
রামু কহিলঃ
 নিতাই ওরে চেনে বইলাই তো আইছে। নিতার ম্যায়া নিতার বোর চাইয়ো লক্সী, খালি আমার কথা ফেলবার পাইরলনা।

গোপাল মনে মনে লজ্জিত হইল,কারন সে বুঝিতে পারে নাই যে কৃষ্ণকে তাহার পছন্দ।।এইবার নিতাই রামুকেে কহিল,
ঃপন্চায়েতের না কি? হ্যারে নিয়া আসুন
রামু গোপালকে কহিল, 
ঃনগেনদা কুনে, দিন তারিখ দিলে তে হ্যারে লাগবু
এরপর গোপাল ঝুপড়ি থেকে বাহির হইল। নগেন দাকে ডাকিয়া আনিবার জন্য। সাবিত্রী উঠোনে পিরিতে বসিয়া ছিল। গোপালকে ঘর হইতে বাহির হতে দেখিয়াই তাহার সন্মুখ দাড়াইল। সাবিত্রী কহিল,
ঃনিতাইর বাড়ি গিয়া দিন তারিখ দিও।
আইজক্যা না দিলা।
গোপাল কয়েকমিনিট দাড়াইয়া রহিল তারপর কহিল,
ঃতুই ম্যায়াডারো দেখবু?
সাবিত্রী মুখে কোন কথা না বলিলেও নিজে বুঝতে পারল, সে না দেইখ্যা পুলারে বিয়ে দেবে না।
হনহন করিয়া ছুটিয়া গেল নগেন



                  ( ৬)


নগেন আসিবার পর নিতাই তাহার দিকে দুইহাত তুলে নমস্কার করিল। ছোট্র ঘরের মধ্যে যায়গা সংকুচিত হওয়ায়। রামু বারান্দায় বসিয়া কথা পারিতে চাহিল, নিতাই,নগেন, গোপাল, রামু তাহারা ঝুপড়ীর মামনে হাত দশেক এর মত যায়গা সেখানে চটের উপর বসিল। কৃষ্ণ তখন তাহাদের ছাড়িয়া দুরে কোথাও চলিয়া গিয়াছিল। সাবিত্রী এইবার তাহার ঘরখানাতে প্রবেশ করিতে চলিয়া যাইতেই গোপাল কেষ্টুর মাকে ডাকিল। 
ঃতুমার পোয়া কথা থাকলি কইবার পারোস।
নগেন জিগাইল,
ঃতোমরা ম্যায়াডুরে দেখছু। আমি কই কি, তুরা দুইজনেই যা আগে ম্যাযাডারো দেহু, আমারে কইলি আমিও না হয় যামুনে।
গোপাল বলিল,
ঃদুইবছর আগে দ্যাখছিলাম, রামুর হোসুর বাড়ি গেছিরাম তো।আমার দেখতি হবি না। সাবু যদি দেখতু চায় হ্যারে কও। 
ঃসাবু--- গোপালে তর কতা কয়, 
ঃঃএকটাই পুলা আরেকবার যাইন নি।
ঃতয় বেহাইয়ের নাম কি?
ঃনিতাই 
ঃকাইমকাজ তো জাইত পেশাই
ঃহ--- বাপদাদা অইডাই করছে ছুটো সংসার আর কাম কাইজ ভালই পাই। বাপের নাম আছে তো হগলে চেনে
ঃসাবু কইতাছে আরেকবার দেখতু, আমি কই কি দুইচারদিন পরে ওরা দেইহা আহুক। যদি মনে টানে তহন গোসাইরে ডাইকা  দিন তারিখ ঠিক করুমনি।

গোপাল এসমন্ধ হাত ছাড়া করিতে চাহে না না। তাইতো উঠোন থেকে সাবিত্রীকে ডেকে ঘরে নিয়ে গেল। তাহার সহিত অনেক ফিসফিস করিয়া কথা বলিতে লাগিল, কিন্ত বাইরে থেকে কিছুই আন্দাজ করা গেল না যে ঘরের মধ্য কি বলাবলি করিতেছে। অবশেষে ঘর থেকে দুইজনেই বাহির হইয়া গোপাল আবার উঠোনে বসিল, তারপর নগেনকে কহিল,

ঃদাদা আমার পছন্দ, সাবুরে খুইলা কইলাম সব, অয় তো চেনে না তাই অমত করতাছিল। তয় অহন রাজী।রামুও আছে কইকি বিয়ার একটা দিন তারিখ দিয়া দু।
কৃষ্ণরে অার সাবুরে দিয়া কাইলি রামু বেড়াইবার পাঠাইয়া দিমু নি।দরকার অইলি মুই যামুনি।
ঃবেহাই তুমি অইলা কেস্টর মামু তুমি কইলে আমি কতা পারবার চাই।

                      ০৭)
 
ঃকইতাছি অহন তো বিকাল গোয়ে যাইতাছে। নোইন যাই বাজার থা্ইক্যা চাটা খায়া রাইতে বইসা কতা পারুমনে। আইজ তো আর যান যাবো না। নগেন দা কি কন?
ঃআত্বিয় করবা তারাহুরা কইরা কি অবো। গোপাল ওই কথাই, রাইতে বিশু, কানাই আছে ওগো নিয়া বইসা যা অয় কর। 

সে রাত্রেই বিবাহের দিন তারিখ ঠিক হইয়া গেল। বোশেখ মাসের  বারো তারিখ রবিবার।দুইভরি রুপার গয়না আর দুই হাজার টাক পণ চাহিলে নিতাই একহাজার টাকানদিতর সন্মত হইল। গোপালে তাহাতে রাজী হইবার পরই গোসাই দিন তারিখ ঠিক করিয়া দিলেন।ঋষি পল্লীতে  তারপর গভীর রাত্রে তাহাদের শুইবার জন্য বাসুর ঘরে  ব্যাবস্থা করা হইল। বাসু আর কৃষ্ণর জনৌ বিছানা করা হইল গোপালের ঘরেই একপাশে। সাবিত্রী মা্ঝরাতে হঠাৎ ঘুম ভাংগিয়া গেল। মাথার কাছে দেশলাই এররকাঠিতে ঘষা দিতেই দেখিল,বাসু উলংগ হইয়া শুইয়া আছে। কিন্ত দেশলাইয়ের কাঠিটি দ্রুত নিভিয়া গেল।সাবিত্রী বাসুকে এ এঅবস্থায় দেখিয়া গাখানি শিরশির করিয়া উঠিল। গোপাল অচেতন মনে তখন ঘুমাইতেছিল।পরমুহুর্তে আরো একটি কাঠি ঘষা দিতে যাইবার উপক্রম হইলে তাহা আর দিল না।
কিন্ত তাহার এতটাই প্রশাবের বেগ পাইয়াছিল যে, বিছানায় স্থির থাকা সম্ভব হইতেছিলনা। শেষমেষ আলো না জ্বালায়েই ঘর থেকে বাহির হইল। কিয়ৎকাল পর খুব সন্তরপনে ঘরে ফিরিয়া আরো একটি দেশলাইয়ের কাঠি জ্বালাইল,কিন্ত দ্বিতীয় বার উহা দেখিবার পর নিজেকে ধরিয়া রাখিতে পারিতেছিলননা। ঘরটি তখন ঘুটঘুটে অনকার্ধ।বিছানায় মাথাররনিচে বালিশ দিয়ে অনেককাল কাটাইল, কিন্ত নিজের শরীরখানি থেকে অজান্তেই ঝরঝর করিয়া ভিজিয়া যাইতে লাগিল। অতপর গায়ের শাড়ীখানি সরায়ে গোপালের পিঠে তাহার বুক দিয়ে শক্ত করিয়া ধরিতে উপক্রম হইল কিন্ত গোপালের তেমন কোন সারা মিলিল না।
যৌনতা মানুষের এমন এক ব্যাধি যে হঠাৎ করিয়াই মানুষের শরীরে তাহা ভর করিয়া বসে। 

             (০৮)

পরদিন সকালে রামু ও নিতাই ঋষি পল্লী থেকে বাহির হইবার পরে গোপাল কে রামু কহিল,
ঃ নতুন বেহাই কেষ্টুর জন্য ঘরের কথা কয়। 
ঃসময় তো আছে ছোট কইরা একখানা ঘর বানামুনি

নিতাই চলিয়া যাইবার পর থেকেই কৃষ্ণর বিবাহর বন্দোবস্ত আরম্ব হইল। শখানেক লোকের আয়োজনে কয়টা ছাগল কয় সের চাল,ডাল তেল, যাযা দরকান মোটামুটি তাহার একটা অংক কষিতে লাগিল। সপ্তাহখানেকের মধ্যে ছোটখাটো দরকারি অনেক কিছুই কিনিতে লাগিল। মহাজনের নিকট থেকে চরা সুদে হাজার খানেক টাকাও লইল। নিজের গচ্ছিত পাঁচশ টাকা বারবার করিয়া গুনিল। সে মনে মনে ভাবিল,বিয়ে কোনমতে পার হইয়া যাইব। তাইতো মহা ানন্দে সাবিত্রীর সহিত দিনের পর দিন পরামর্শ করিতে করিতে চৈত্রী মাস পেরিয়ে যাইবার সময় হইল। তখন রাত্রীবেলা সাবিত্রী কহিল নিতাইয়ের বাড়ি যাইতে। গোপালের বয়স আর সাবিত্রীর বয়সের খুব একটা পার্থক্য না। কিন্ত মাত্র সাতাস বছর বয়সেই চোয়ালের দাত খেচকে গেছে।শরীরটাতেও বার্ধক্য নেমে এসেছে। চুলগুলো জটলা পাকিয়ে মোটামুটি সন্যাসের মত দেখিতে লাগে। গায়েও খুব একটা জোর নাই।এই ঋষি পল্লীতে  শুধু গোপাল না, গোপারের সমবয়সী প্রায় সকলেরই একই অবস্থা। অনাহারে অর্ধাহারে বেচে থাকা মানুষগুলো অপুষ্টিতে ভুগতে ভুগতে চল্লিশের কোটা পেরোয় না তার আগেই এরারোগশোকে মৃত্যুর কোলে ঢরে পরে।

কিন্ত  সাবিত্রী বয়স গোপালের চেয়ে দুবছর কম হইলেও তাহাকে বাহির থেকে কেহ প্রথম দেখিলে মনে হইবে যেন সবে বিবাহের বয়স একটু পেরিয়ে যাইতেছে।
ইহা লইয়া ঋষি পল্লীতে গোপালের সমবয়সী ছাড়াও আশপাশে মুসলমান উঠতি ছেলেরা ঠাট্টাতামাসা করিয়া থাকে।
লোকজন ঠাট্টা করিলেও গোপারের কাছে ইহা বারবার শুনতে মন চায়। কেননা, তাহার বউ ঋষিপল্লী সবচে সুন্দরী বউ
যাহা হোক, সাবিত্রীর পরামর্শ গ্রহন করিয়া এই সিদ্ধান্ত গ্রহন করিল যে সে নিজে বিবাহের আগে নিতাইয়ে 

              (৯)

নিতাইর বাড়ি যাবে।
পরেরদিন বটতলা বাজার হইতে রনদার দোকানের দুসের মিষ্টি নিল। তাহার বাড়ি যাইতে দুপুরের আগে আগে সে পৌছাইল। গোপাল দেখল নিতাই বাড়ি  নাই। কিন্ত তাহার মেয়ে সতী থ মেরে পাশে দাড়াইয়া রহিল। দুই পল্লীতেই ঘরবাড়ি একই অবস্থা।এখানে সত্তরটির মত ঘর আছে। সবগুলোই ঝুপড়ী, কলা পাতা ছন সোলা আর সারের কাগজ দ্বারা নির্মান করা ঘর। সেদিক থেকে নিতাই আর গোপালদের পরিবার শতভাগ মিল রহিয়াছে।
গোপাল ঋষিপল্লিতে  প্রবেশ করিতেই খগেন লিকরিক চেহারার সাদাচুল আর সাদা চোখওয়ারা মানুষটাা গোপালের পরিচয় জানিতে পারিবার পরই তাহার ঘরখানা দেখাইয়া দেয়। সতী পীরি আগাইয়া দিতেই হুরমুর করে ডুকে পরলো। দশ থেকে পনেরোজনের একটি মহিলার দল।
তাহারা বেহাইকে খাতির যত্ন একথা সেকথা বলিয়া ঠাট্টা মসকার করিতে লাগিল। সতী এই দশ বছর বয়স্কা নাবারিকা মেয়েটি কিছু না বুঝেই মিষ্টির হাড়ি লইয়া তাহাদের পাশে দাড়াইয়া ছিল। বয়স্ক একজন মহিলা তাহার হাত থেকে উহা নিয়ে সবাইকে মিষ্টি মু্খ করিইতে লাগল। গোপাল আগে থেকেই জানত যে, নিতাইর সহিত তাহার মায়ের বনিবনা না হওয়ায় তিনি বাপের বাড়ি অধ্যবধি অবস্থান করিতেছেন। নিতাইর সাহিত তাহার সম্পর্ক নাই বললেই চলে। 
গোপাল সতীকে দুবছর অাগে দেখেছিল। নিতাই দেখল সতীর চেহারা আগের চেয়ে আরো সুন্দর হইয়া গেছে। 
তাইতো তাহাতে কাছে টানিয়া কেবলমাত্র তাহার বাপের তথাই জিগাইল, সতী ভাংগা ভাংগা গলায় কেবল বলিল যে সে সন্ধের আগেইরফিরবো।
পুত্রবধূকে নিজের মেয়ের মতই মাথায় হাত বোলাইতে বোলাইতে অনেককাল কাটিয়া গেল। দুপুরবেলা ঘরে খাইবার মত তেমন কিছই ছিল। সতী জানে পাতিলের নিচে অল্পনএকটুরভাত আছে। যদিও তাহা এতক্ষণে সে খাইতো কিন্ত এই নতুন লোকের আগমনে তাহা আর খাওয়া হইতেছে না। কিন্ত আশপাসের ঘরগুলি থেকে আগত মহিলারা চলিয়া যাইবার পর, গোপাল নিতাইর ঘরে যাইতে 


                   (১০)

গোপালে ঘরে যাইয়া নিতাইর মাটিতে পাতা বিছানায় বালিশটা টেনে মাথার নিচে দিয়ে গরাগড়ি করিতে লাগিল। সতী এই পপুচকে মেয়েটি ভাবির দুপুরে ওই রোকটার জন্য কিছু খাবার ব্যাবস্থা করা দরকার। তাইতো সতীর হাতে নিতাইর রেখে যাওয়া দুই টাকার নোটটা পরনের প্যানের ছিদ্র থেকে তা বাহির করিয়া ঋষিপল্লীতে চন্ডির দোকানে যাইয়া চিড়া কিনিল। চন্ডি সতীর হাতে দিয়াই কহিল,
ঃসতী তর বাপ আইছে 
ঃনা
ঃতয় চিড়া দিয়া কি করবি?
ঃবটতরা থোন একজন কাকু আইছে।
;ওইহানে তর বিয়া না, হেগো কেই আইছে।
সতী চন্ডির সহিত কোনকথা না বলে দ্রুতগতিতে ছুটল ঘরের দিকে।
এরপর, গোপালকে কহিল,
ঃকাকু চিড়া
ঃথারি আনো জল আছে
সতী মাথা দিয়ে নাড়িল।
গোপাল দেখিল একপোয়ার মত চিড়া তার থেকে অর্ধেক থালায় নিয়ে তাহা জলে ভিজাইতেছিল। সেসময় মাটির হাড়িতে রাখা মিষ্টি হাত দিয়ে তুলে ধরতেই গোপাল হাসিতে লাগল।
সে মনে মনে ভাবিল, কৃষ্ণর জন্য এমন বউই তার দরকার। তাইতো কথা না বরে চুপচাপ মিষ্টি আর চিড়া হাতে নিয়ে কহিল,  সতী তরে রাইখা কেমনে খামু,
সতী অপচরিত এই লোকটার মুখের দিকে হা করে তাঁকিয়ে রইল।
এপর থালাটি এগিয়ে দিল। গোপাল আল্প কিছু ভেজা চিরা তুলে দিতেই কহিল,
ঃকাকু তুই খা, আমি এত খাইতে পারিনা।
জাতলাউয়ের ফুলের মত ধবধবে এই মেয়েটার থেকে চোঁখে ফেরাতে পারিতেছিলননা। গোপাল সতীকে মনে মনের তাহার নিজের মেয়েই ভাবিতে লাগিল। 
বিকেলের দিকে গোপালের আর ঘরে থাকতে মন চাইল। তাইতো সতীকে কহিল,ঃ সতী মা আমারে তু বাজারে নিয়া যাবি?
গোপাল একাই বাজারর যেতের
 পারতো।কিন্ত ইচছে করেই সতীকে বাজারে বেরাতে নিয়ে যেতে চাইল। কারন সে জানে দুদিননপরেই সে চিরতরে আমাগো পাড়ায় থাকবো। অনেকটা জোরখাটাইবার পর কহিল, ঃখগেন কারে কইতে অবু।
গোপাল বুঝতে পারলন,নিতাই মেয়েকে একা বাড়ি রেখে গেলেও  তার দেখভাল করিবার মত পন্চায়েত আছে। 


                     (১১)

খগেনের ঘরখানা ঋষিপল্লির সর্ব দক্ষিণে অর্থাৎ এপল্রিতে প্রবেশ করিবার পর প্রথম ঝুপড়ি খানা। সতী তাহার নিকট লইয়া যাইতেই দেখিল,ঝুপড়িটার সামনে দুপায়ের উপর ভর করিয়া বসে আছে। নম্কার করিতেই কহিল,
ঃকোনঠানে যাইবার লাগছোন, নিতাই সন্ধাবেলায় আইসবু।
ঃভাবলুম সতীরে নিয়া বাজার থোন ঘুইরা আহি।
ঃতু রামুর বোিন জামাই এইহানে আর কেউ চিনবার পারব না তয় আমি জানি। যা তয় তারাতারি ফিরবি, নিতাই শুনলে রাগ করব।
গোপাল অনুমতি দেবার পর আর কোন কথা বাড়াইল না।এইবার সতীর হাত খানি ধরিয়া টানিতে টানিতে লইয়া গেল বাজারে।
সতীরর পরনে পুরোনো একটা ফ্রকের মত সাদা জামা ছিল। কিন্ত তাহা পুরাতন হওয়ায় ওটা লালচে ভাবে াসল রংটা ঢেকে গিয়াছিল। আন্দাজ করিল হয়তো ছোট একখানা প্যান্ট পরা আছে। তবে পা দুটো খালি।  তাইতো বাজারে যাইয়াই ছয় টাকা দিয়ে তাহার পায়ের মাপে লালফিতা্রয পন্চের একজোরা জুতো কিনিল এর পর সতীর হাতে দিতে চাহিলে তাহা নিতে সতী অসন্মতি জানাইতে লাগিল। কহিল,বাপে দেখলে কাহারে বকবো।
গোপাল তাহা শুনিবামাত্র কিছুকাল হা করে দাড়িয়ে রইল এরপর কহিল
ঃতাইলে আমার হাতেই থািক
এরপর তাহারা সারা বাজার ঘুরিয়া ঘরিয়া বিভিন্ন দোকানপাটের সামনে দাড়াইয়া শেষমেষ। একমুদি দোকানে গিয়া হাজির হইল, দোকানীর নিকটরথেকে, সতীর জন্য আলতার শিসি, কাঁচের চুরি, চুলবাঁধিবার লাল ফিতা, এবং একখানি বনানী স্নো কিনিয়া মোটামুটি কুড়ি টাকার মতন খরচরকরিয়া ফেলিল। এদিকে সন্ধার সাখ বাজাইবার সময় ঘনিয়ে আসতে থাকায়, এই ছোট্র সেয়েটি আর বাজারে থাকিবার চাহিতেছিল না। হোপাল। ব্যাপারটি বঝিতে পােিয়া তাহার হাতখানা ধরে ঋষি পল্লির দিকে হাটতে শুরু করল। বাড়ির থেকে বাজার মাত্র পনের মিনিটের পথ তাইতো ঋষিপল্ল্রিতে ফিেিতে খুব সময় লাগিল না। গোপাল দেখিল নিতাই জুতো সারিবার কাঠের বাক্সটা কাঁধে নিয়ে তখন খগেনের 


              (১২)

দুর থেকেই নিতাই গোপালকে দেখিয়া হাত উচু করিল। নমস্কার পর্ব হইয়া গেলে কহিল,
ঃ আপনে আইছেন শুইনা অমি খুশি অইছি তয় আমারে আগে জানাইলে বাড়ি থেকে বাইরই অইতাম না। জানুন তো আমি মায়া নিয়া একলা থাকি। হেই দুপুরবেলা আইছোন, খগেন দা কইলো। তারপর হুনলাম সতীরে নিয়া বাজারে গেছেন। তাই আর ঘরে যাই নাই। নুইন যাই ঘরে বইয়া কতা কই।
ওই সতী হেরে তুই চেনোস। হেয় কিন্ত তর বাজান অইব।
খারাপ ব্যাবহার তো করোস নাই।

সতী মুখে কিছুই কহিল না তবে কাঁধের কাঠের বাক্সটা দিকে হাত বাড়াইতেই তা ওর হাতে দিল।
এরপর তাহারা তিনজনে তাহার ঘরখানির দিকে হাটিতে লাগিল। সাত,আটটা ঘর পেরুবার পর নিজেররঘরখানিতে কেরাসিন এর কাঁচের বোতলে সোণতের মত বানানো কুপিতের আলো জ্বালাইল।
এরপর গোপালর নিকট জানিতে চাহিল তাহার বাড়ির লোকজনের খোঁজখবর লইবার পরই ঘরখানা থেকে হাক ছাড়িল,
ঃবিষ্টু মাও আইসো তো
দুতিনবার হাক ছাড়িবার পর বিষ্টুর মায়ের সারা মেলিল, মিনিট পাচেকপর সে আসিয়া দরজায় দাড়াইতেই কহিল,
ঃবিষ্টু বাড়ি আইছে? 
ঃহয় এইতো আইলো
ঃওরে দরকার আর তু চারটা ভাত রাইধা দে, বেহাই আইছে হ্যার লগে কতা কয়ন দরকার।

বিষ্টু বাবা বছর পাচেক আগে মারা গেছে। তাহার বয়স এখন চল্লিশ ছুইছুই কিন্ত মাথার চুলগুলো পেকে ধবধবে সাদা হয়ে গেছে। বিষ্টু বয়স পনোরো এবছরই সে বিবাহ দিয়াছে। বিষ্টু তাহার রোজগার এর সামান্য টাকাপয়সা দিয়ে কোনমতে সংসার চালাইয়া থাকে। বিষ্টু নিতাইর দুরসম্পর্কের ভাতিজা।
নিতাই তাহাকে খবর পাঠাইবার আগেই বিষ্টু ঘরখানাতে হাজির হইল,
গোপাল তাহার হাতে কুড়িটাকার একটা নোট ধরায়ে দিয়ে কহিল,
ঃকারো বাইত থেন একটা কুড়কা ধইরা আন
বিষ্টু টাকাটা নিয়াই চলিয়া গেল। বিষ্টুর মা মুরির টিনের বাক্স হইতে চাল আর মাটির পাতিলটি নিয়ে রান্নায় করিতে ব্যাস্ত হইয়া পরিল। নিতাই জানে, বৌদির রান্নার হাত খুবপাকা



                   (১৩)

রাতে বিষ্টু, বৌদি,তাহারা তিনজনেই খাওয়া একত্রে করিল। গোপাল খাবার খাইবার পর বৌদির রান্নার খুব প্রসংণা করিল। কিন্ত সতী তখন ঘুম ভাব হওয়ায় বিছানায় এককোনায় তাহাকে শুইয়া থাকিবার নির্দেশ দিতেই। এইরবাচ্চা মেয়েটি দ্রত ঘুমিয়ে পরল।েরপর নিতাই পাঠাইল ঋষি পল্রির প্রধানদের ডাকিয়া আনতে। একেএকে নিতাইয়ের উঠোন খানি লোকজনে ভরিয়া উঠিল। ঝুপড়ির বিবাহিত মেয়েগুলো দুরে দাড়াইল। এবং সে রাত্রেই সতীর বিবাহের পাকা কথা হইতে লাগিল।
রাতরগভীর হইলেও আকাশ পরিষ্কার থাকায় উঠোন খানি দিনের আলোর মতই মনে হইতেছিল। যেহেতু দেনা পানা নিয়ে আগেই কথা হইয়া গিয়াছিল তাইতো তা নিয়ে নতুন করিয়া আর কোন কথা হইল না তবে তাহারা কতজন বিয়েতে নেমন্তন্নে করিবে তাহা লইয়া চুলচেরা বিশ্লেষন চলিতে লাগিল। খগেন বস্তির পন্চায়েত প্রধান তাইতো তিনি সকলের কথা শেষ হইলে কহিল
ঃবেহাই,তরে কোন কতা কয়নের নাই তয় নিতাইরে কিছুই কয়ন আছে।
নিতাই কহিল,
ঃতর কতা আমি ক্যান এইহানে বেবাকেই হুনে। তুই কয়া দে কঢজনে আইবো
ঃবেহাই সমাজ লইঢা তো বেবাকেই চলি, আমি কইছিলাম কি যা হুনলাম তাতে ত্রিশঘরে ত্রিজনেরেরতো কয়নই লাগব। ছেলে পুলে আছে তয় চল্লিশ জনের মত আইসো
তা কি কও বেয়াই?
ঃতরে হোগলেই মানে আররখারাপ কিছুই কও নাই, আমি পারলিরএকজন কমই আসমু। আর একখান কতা কইবাররচাই?
ঃকও হোগলেই হুনুক
ঃআমারও তো ছোল একটাই, বেবাকেই চায় বিয়ায় মেলারোকজন। কিন্ত সামরথ কম, তোরা বয়জন যাবিকইলি ভালই অয়। 
ঃনিতাই কয়জন কইবি?  বেয়াইরে কইয়া দে
নিতাই অনেকক্ষণ চুপচাপ রহিল, পুরো উঠোন কানাকানিতে ভরে উঠতে থাকলে।
গোপাল কহিল,
ঃ আমি শও জনের বেশী পারুম না।  বেয়াই তুই এর মধ্য থাকিস।
নিতাইর মুখখানা খুশিতে ভরে উঠল কেননা, মেয়ের বিয়ে কেইরে কইতে না পারলে সকলেই তাহাকে তিরস্কার করিত। কিন্ত শতজনে গেলে মোটামুটি এখানথেকে প্রতি ঘরের লোকই যা

                  (১৪)


পরেরদিন সকালে গোপাল বাড়ি ফিরিবার কালে ঋষিপল্লির সকলেই তাহার সহিত করমর্দন করিতে লাগিল। সতীর মাথায় হাত বোরাইতে বোলাইতে তাহার হাতে দশটাকার একটা নোট ধরাইয়া দিল।  পল্লির সহিলারা বলাবলি করিতে লাগিল যে সতী বাপের মতই একজন শশুর পাইয়াছে। যে বিবাহের আগেই তাহার জন্য কত বিই না কিনিয়া দিয়ে গেল। নিস্চই সে সুখি হইবে।
গোপাল যদিও তাহা শুনিতেছিল কিন্ত সেদিকে দৃষ্টিপাত করিল না। নিতাই পথ চলতে মোটামুটি বাজার অবধি পৌছাইলে তাহার জন্য একখান রিক্সা ঠিক করিতেই গোপাল তাহাতে চরিয়া বসিল এবং নমস্কার জানাইতেই রিক্সা সামনের দিকে আগাইতে লাগিল।

দুপরের কিছুকাল আগে গোপাল ঋষিপল্লিতে ফিরিল। সা্বিত্রী উঠোনে তখন সবে রান্না শেষ করিয়াছিল। কৃষ্ণ বাবার নিকট দাড়াইল, হাসি হাসি  মুখে কহিল,
ঃসাবু হোন সতীর এত বুদ্ধি যে তুইও ওর কাছে কিছুই না।
সা্বিত্রী হো হো হো করিয়া হাসিতে হাসিতে
ঃকি দেখলা ওর মধ্য
ঃমা দুগ্গার মত চোঁখ, দুগ্গা মার মতই দেখতু।তুই গেলি দেখলুনি কত বুদ্ধি ওর।
ঃআমায় খুইলা কও
ঃবেহাই আছিল না, দুপুরকালে ওই দোহান থেইক্যা চিরা আনল কিনা। তার পর জল দিল, তুই যেমন কইরা বেবাক সময় দেস, অয় তাই তাই করল।
ঃকিছু খাযোন কিনা দেও নাই
ঃকৃষ্ণ নগে বেশ মানাইবো দেহিস। বেয়াইতো সালা হুতুমপেচা, 
ঃআর কিছু কইছে
ঃহ তগো কতা জিগাইল,
ঃঅহন যাও চান কইরা আইসো।
ঃদে তপন ডা আগে চান কইরা নই। ভাত অইছে।
ঃহয় কিসনো বাজার থেইকা দুইটাকার পুঁটিমাছ আনছে।

বাড়ির উত্তরে পুকুরপাড়, স্বজাতিরা সবাই ওখানে স্নান করিয়া থাকে। ছোটএকটা জোলার মতন হয়তো কোন এককালে এইখানদিয়ে নদীর ডাল নেমে গিয়েছিল। তাইতো চৈত্রী মাসেও এখানে জল শুকায়। দুপুরবেলা পল্লীর সমস্ত মহিলারই স্নান করে এখানে, কারন পুরুষগুলো এ সময় দুরদুরান্ত থাকে। তাইতো প্রচন্ড গরমে বাচ্চাকাচ্চা রা পানিতে ঝাপাঝাপি করিতে 


                   ১৫

বয়স্ক মহিলাগন অর্ধনগ্ন হইয়া স্নান করিতেছিল। নিম্ন আয়ের এই মানুষগুলের মধ্যে তা লইয়া কোন অাক্ষেপ নাই।গোপাল মাটিতে দুপা সামনে আগায়ে নিভির মনে একটার পর একটা বিড়ি টানিতেছে। 
 ঘাটে তখনও ছেলে পুলেরা জলে লাফাইতেছিল। হয়তো কোন এককালে এখান দিয়ে নদীর যমুনার ঢাল নামিয়া গিয়াছিলি। ঋষিপল্লীর কাছাকাছি কোনবাড়িঘর নাই। তাইতো দুপুরবেলা এদিকে বাহিরের লোকের যাতায়াত তেমন একটা চোঁখে পরে  না।  ঘাটে স্নানরত পল্লীর মেয়েদের এটা নিত্য দিনের অভ্যাশ তাইতো গোপালর দিকে কেহ ফিরিয়া তাঁকাইল না। সাবিত্রী গোপালের আসতে দেরীেহওয়ায় কৃষ্ণকে ডাকিতে পাঠিয়েছে। গোপাল কৃষ্ণর উপস্থিত হইতেই দুইহাতের মত গামছাট কোমরে চাপাইয়া পরনের লুঙ্গীটা খুলিয়া জলে নামিল। গোসলের জনৌ। 
 তাহার পর স্নান করিয়া ফিরিতে দেরী হইলেও সা্বিত্রী ইহা লইয়া কোন কথা জিগাইল না তবে, ভাত মুখে দিতেই বলিণ,

বিবাহের কথা উঠিবার পর থেকেই কৃষ্ণ তাহার বাবার সহিত খুব কম কথা বলে। কারন সে বিবাহের অর্থ যাহা জানিত তাহা হইল, একঘরে একসাথে শুইয়া থাকা। কিন্ত পল্লীর দাদা সমতুল্য রা যৌনতা নিয়ে তাহাকে অনেক কিছুই বলিয়া থাকে। প্রথমে দু একদিন শরমে দুরে দুরে থাকিত। কিন্ত এখন তাহা বলিলেও আর লজ্জা পায়না। বাসুদেবের সহিত আজকাল খুব একটা কথা বলে না, কারন কাছে আসলেই সতীর ব্যাপারে জানিতে চায়। এবং তাহার সাথে কেমনে করে ঘরে শুইবে তাহা লইয়াও দু এককথ্ আগ বাড়িয়ে বলার চেষ্টা করে। এবং নোংরা নোংরা সব কথা বলিত। ইহা লইয়াই বাসুদেবের সহিত ঝগড়ার মত হইয়া গেছে।
বাসুদেবও আজকাল ঝুপড়ির চারধারে ভেরে না।সাবিত্রী তাহা লক্ষ করিয়াছে।
কিন্ত সাবিত্রী তাহার উপর রাগ করে নাই কেননা, আজ বাদে দুদিন পর তো তাহাকে তাহা শিখতেই হবে। যেহেতু বাসুর ওসব বিষয়ে জ্ঞান আছে তাইতো তাহাকে একটু বেশী পরিমান প্রস্চয় দিয়ে থাকে। 

            ১৬

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

রমাদি ১০

স্কুলে নিয়মিত এই পোশাকই পরে।বিপিন রীতিনীতিও সব শিখিয়ে দিল।বিপিনের বোন রমাও পাঠ্যে হিন্দুধর্ম শিক্ষা-র যেকোন বিষয় না বুঝলে, তা আলোচনার মাধ্যমে সহযোগীতা করতে থাকে আজকাল বদর, বিপিনের কাজ কর্মেও সহযোগীতা করে। রমার মা,বদরের এই আচার ব্যাবহারে নিজেও গর্বিত। শুরু থেকেই বিপিনের মাকে, বদর মা বলেই ডাকে।গোঁরা সমাজের লোকগুলোও তার আচার ব্যাবহারে সব কিছু ভুলে যায়।অল্পদিনেই স্কুলেও শিক্ষক থেকে শুরু করে সবার প্রিয় পাত্রে পরিনত হলএই ছেলেটি।প্রতিদিন বিকেলে বদর এখন স্কুল মাঠে ফুটবল খেলে হিন্দু ছেলেদের সাথে। রমার বান্ধবী বিথী প্রায় প্রতিদিনই দুই একবার রমাদের বাড়িতে আসে। আজও বদর এই সময় মাঠে ফটবল খেলিতেছে, এই ফাঁকে বিথী বদরের রুমে যায়, গিয়েই রমাকে বলে ঃএই রমা আমি বদরদার ঘরে রমা তখন ওদের বড় ঘরখানাতে ছিল, একদৌড়ে এসেই দেখে বদরের রুমে বিথী শুয়ে আছে ঃ বিথী তুই বদর দার বিছানায়! ঃ বদর নাই তাই ঃ দাদা দেখলে বকবে ঃ দাদাও নাই হি-হি-হি—হি অনেকক্ষন হাসাহাসি করে দুজনে।এক পর্যায় বিথী বলল, ঃবদরের বাবা,তোকে অনেক ভারি একটা মালা দিছে--তাই না? ঃ ওইটা মায়ের কাছে-যদি হারিয়ে যায়।চল তোকে দে্খাব এরপর,দুজনেই বদরের রুম থেকে বের হল, রম

রুদ্র ম আল-আমিন এর কবিতা, যন্ত্রণা

               " যন্ত্রণা "           রুদ্র ম আল-আমিন নিজেকে  নিজের মতন              বিসর্জন দিয়ে।                        আজি বেচে আছি                 এ -ওর ধার দেনা দিয়ে। কন্ঠনালী ছিদ্র আমার                               রপ্ত করেছি           ঝোড়ো হাওয়া উরতে চলা। আর্যছিলাম পালছেড়েছি              থাকতে দিসনি তোদের সাথে, তাই বলে কি হারিয়ে গেছি                সবার থেকে। বলছি কথা মোদের তরে বলছি নাকো ভুলে যেতে                                   যাচ্ছি তবে যাই। রাখবি মনে,, সকল যাতন রইবে প্রানে কাঁদবি তবে                 দিচ্ছি তোরে বর হাসবো আমি কাঁদবে তর, আপন যত, কার বা আপন কে করিল? বলতে পারিস?         নিখিল ভারত, রইল পরে কার বা তরে।

রমাদি ০৪

স্কুল ছুটি হয়েছে অনেকক্ষন কিন্ত তবুও হেডমাষ্টার মশাই চেয়ারে হেলান দিয়ে চোঁখ বন্ধ করে বসে আছেন। দপ্তরী নীলু বাহিরে বসে অপেক্ষা করছে কখন স্যার বের হবে।শেষমেশ প্রতিক্ষার প্রহর কাটলো, মাষ্টার মশাই বের হলেন, দপ্তরী পাশে দাঁড়িয়ে অফিস কক্ষ তালাও দিলেন, চাবি হাতে দিতেই দেখলেন , চোঁখ দিয়ে জল গড়িয়ে পরতেছে।দপ্তরী ভাবল কিছু একটা বলি, আবার ভাবল না থাক। তবু আগ বাড়িয়েই বলল, ঃ বিপিনকে পাঠাবেন স্যার?ওর বোন রমা আর বদর, একই ক্লাসে পড়ে!  বিপিনকে ডেকে আনবো?বিপিনের ছোট বোন রমা একটু ব্যতিক্রমী,কিন্ত ওই একমাত্র বদরের সাথে কথা বলে।  নীলুর ধারনা বিপিনকে বদরদের বাড়ি পাঠালেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। নীলুর বকবকানি শোনার পর হেড মাষ্টার সাব কি যেন ভাবল, তার পরই নিলুকে বলল, ঃযাও ডেকে নিয়ে আসো!  নিলু দেরী না করে দ্রুত চলে গেলেন বিপিনদের বাড়ি। মাষ্টার মশাই ততক্ষণ স্কুল বারান্দায় পা- চারি করছিল।যেহেতু স্কুল এর পাশেই বিপিনদের বাড়ি, সেহেতু নীলুর খুব বেশী দেরী হল না বিপিনকে ডেকে আনতে।  বিপিন, স্যারের সামনে দাঁড়িয়ে নমস্কার করতেই স্যার বলল, ঃবদরদের বাড়ি চেন? ঃ স্যার, শুনেছি মাইল দশেক পশ্চিমে ঃতুমি কাল সকালে ওদের ওখানে একটু য