দেখতে দেখতে এই বাড়িতে বদরের পাঁচ বছর কেটে গেল। বদর এই পাঁচ বছরে,নিজেকে কখনোই বাবা মায়ের অভাব বোধ করেনি। রমার মা বদরকে নিজের সন্তানের মত করেই লালন পালন করছে।বদরও কখনো তাদের অমর্যাদা করেনি।
এখন বিপিন বি,কম শেষ করে ঢাকায় চাকরীর পিছনে ছুটছে।বাড়িতেও খুব কম আসে।রমা ছোট থেকেই ভাল ছাত্রী, তার আশা বড় হয়ে ব্যারিস্টার হবে।সামনে মেট্রিকুলেশন পড়ালেখার প্রচুর চাপ, নিজের সম্পর্কে সব বুঝতে শিখেছে. বদরের সাথেও আজকাল খুব কম মেশে। বদর ওতটা ভাল ছাত্র না হলেও একেবারে খারাপ না।কিন্তু এ্যামভিশন নাই। তবে অনেক পড়াশোনা করবে এই এটুকুই আশা।
পাঁচ বছরে বদর হাত গোনা কয়েকবার মাত্র বাড়িতে গিয়েছিল। বাড়ির কথা এখন তেমন একটা তাঁর মনেই হয় না।বদর দেখতে এখন একজন সুদর্শন যুবকে পরিনত হয়েছে।, ক্লাসের মেয়েরা বদরের সাথে গায়ে পরে কথা বলে।রমার বান্ধবী বিথী বদরকে অনেকদিন ধরেই পছন্দ করে।বিথী জানে বদর মুসলমান,তবু একদিন টিফিনের ফাঁকে বদরের হাত জরিয়ে ধরে, বদরকে বলে যে, তাকে ভালবাসে। এরপর থেকে রমা ব্যাপার টা সহজ ভাবে মেনে নেয় না।এই নিয়ে রমা বিথী মনমালিন্য হয়।পরমুহুর্তে ক্লাসের সবাই এই কথা যেনেও যায়।
যেহেতু সবাই এখন বড় ক্লাস এ পড়ে, তাইতো সবাই এব্যাপারটা চেপে যায়।
সে দিন বদর কিছুতেই বুঝতে পারল না যে, কেন রমা এর জন্য বিথীকে অত অত খারাপ ভাষা ব্যাবহার করল।কারন রমা শুধু দেখতেই সুন্দর না় ওর ব্যাবহারও খুব ভাল। ও এত সুন্দর করে কথা বলে যে, শিক্ষকরাও তাহার প্রশংসা করে। অথচ আজ যেরকম ব্যবহার করল তা কেউ কল্পনা করতে পারেনি. বিথী রাগান্বিত হয়ে অবশ্য বলেছিল ,“বদর যদি চায় আমি মুসলমান হবো তাতে তোর কি?তুই ওকে পছন্দ করিস?
সে দিনের পর থেকেই রমা আর আগের মত মেশে না. বিথীর সাথেও কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে।বদর কিছু জিজ্ঞেসা করলেই বলে,
,সামনে পরিক্ষা, পরে বলবো, এখন পারব না, ঘর গোছাতে হবে. মায়ের সাথে রান্না চড়াবে ইত্যাদি ইত্যাদি বলতে থাকে। বিথীও আর এবাড়িতে আসে না. বদরেররও মন খারাপ হয়ে যায়। তাইতো কদিন ধরে সারাক্ষন ঘরে বসে থাকে। মা লক্ষ করছে যে, ইদানিং বদর তেমন একটা পড়াশোনা করছে না.
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন